ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি না থাকলেও ঘোষণার সময় অস্বাভাবিকভাবে পাল্টে যাচ্ছে ভোটের ফলাফল। রোববারের নিয়ম রক্ষার ওই নির্বাচনে ১৪৭টি আসনের ১৮ হাজার ২০৪টি কেন্দ্রের মধ্যে একেবারেই ভোটারশূন্য ছিল বহুসংখ্যক কেন্দ্র।
সরকার বিরোধী জোটের প্রতিরোধের মুখে স্থগিত হয়ে যায় প্রায় পাঁচ শতাধিক কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। এমনকি রোববার রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুও ভোটার উপস্থিতি কম থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘৭০ এর নির্বাচনসহ অতীতের সব নির্বাচনের চেয়ে আনুপাতিক হারে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল; এটি স্বীকার করছি।’
এছাড়া বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ শেষে নির্বাচনে ১০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেছে।
অপরদিকে ভোটার উপস্থিতি ১০ শতাংশেরও কম ছিল বলে দাবি করেছে পর্যবেক্ষণ সংস্থা ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং এলায়েন্স (ফেমা)।
তবে ভোটার উপস্থিতি কম থাকা সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে ভোটগ্রহণের হার প্রায় ৬০ শতাংশ দেখানো হচ্ছে। নির্বাচন বিরোধী জোটের প্রধান শরীক জামায়াতে ইসলামীর ঘাটি হিসেবে পরিচিত সাতক্ষীরা। সাতক্ষীরার আসনগুলিতে ভোটার উপস্থিতি ছিলনা বললেই চলে।
তবে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, সাতক্ষীরা-১ আসনে তিন লাখ ৮০ হাজার ২৬৭ জন ভোটারের মধ্যে একলাখ ১৯ হাজার ৩৪৪ জন ভোট দিয়েছেন। এরমধ্যে নৌকা প্রতীক নিয়ে ৯২ হাজার ২০০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। এমনিভাবে এখন পর্যন্ত বেসরকারি ফলাফলে বিপুল ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন অথবা বিজয়ী হয়েছেন ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রার্থীরা।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শীর্ষ নিউজ প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যেও ফলাফল পাল্টে যাওয়ার অস্বাভাবিক চিত্র উঠে এসেছে। তাদের মতে, বহুসংখ্যক কেন্দ্রে দিনব্যাপী ভোটার উপস্থিতি কম থাকলে ওই সব এলাকায় দিনশেষে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে বেসরকারি ফলাফলে জানানো হয়েছে।
এছাড়া ভোটের দিন নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে কমিশনের কাছে লিখিত বক্তব্যে অনেক প্রার্থী ক্ষমতাসীন মহাজোট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বিপুল জালভোটের অভিযোগ এনেছেন। একইসঙ্গে ওইসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অনৈতিক প্রভাব বিস্তার ও নানামূখী চাপে অভিযোগ তোলেন তারা।