গাজায় হামাস কমান্ডারকে হত্যা, সন্তানসম্ভবা নারী ও শিশুসহ নিহতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে
গাজায় হামাস কমান্ডারকে হত্যা, সন্তানসম্ভবা নারী ও শিশুসহ নিহতের সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়েছে
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডব অব্যাহত রয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগের দিন বুধবারও সেখানে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় দখলদার বাহিনী। এদিন দফায় দফায় অঞ্চলটির বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করা হয়। এতে হামাসের গাজা সিটি কমান্ডার বাসেম ঈসাসহ দলটির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা নিহত হয়েছেন। হামাসের পক্ষ থেকে দলীয় নেতাদের প্রাণহানির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
হামাস সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনা ছাড়াও পুলিশের ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার বাহিনী। গাজার তেল আল হাওয়া এলাকার একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় রিমা তিলবানি নামের একজন সন্তাসম্ভবা নারী ও তার শিশু সন্তান নিহত হয়।
আগের দিন মঙ্গলবার বিমান হামলা চালিয়ে গাজার ৯ তলা একটি ভবন গুঁড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। ওই ভবনটি ওষুধ কোম্পানির অফিস ও চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে ১৪ শিশুসহ ৫৬ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে দখলদার বাহিনী। এছাড়া তাদের তাণ্ডবে আহত হয়েছে আরও তিন শতাধিক মানুষ। ফিলিস্তিনিদের পাল্টা প্রতিরোধে ছয় ইসরায়েলি নিহত হয়েছে। দখলদার বাহিনী বলছে, গাজা থেকে তাদের ভূখণ্ডে প্রায় দেড় হাজার রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে।
হামাস প্রধান ইসমাঈল হানিয়া বলেছেন, দখলদার বাহিনীর আগ্রাসনের মুখে যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত রয়েছে হামাস। ইহুদিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দলের যোদ্ধারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেন, দখলদার ইসরায়েল যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে তার ঘৃণ্য অপরাধযজ্ঞ বন্ধ না করবে এবং পবিত্র জেরুজালেম শহর ও আল আকসা মসজিদের ওপর দখলদারিত্বের অবসান না ঘটাবে, ততদিন পর্যন্ত হামাস যোদ্ধারা প্রতিরোধ লড়াই অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণকে রক্ষার অধিকার তাদের রয়েছে।
এদিকে হামাসের হামলার তীব্রতায় দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। মঙ্গলবার রাতে রাজধানী তেল আবিবে সাইরেন বাজিয়ে লোকজনকে ঘুম থেকে তোলা হয়। হামাসের হামলা থেকে বাঁচাতে তাদের ভূগর্ভস্থ বাংকারে পৌঁছে দেওয়া হয়।
একদিকে গাজা উপত্যকায় দখলদার বাহিনীর ভয়াবহ তাণ্ডব, অন্যদিকে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের পাল্টা প্রতিরোধকে ঘিরে পরিস্থিতি তীব্র আকার ধারণ করেছে। জাতিসংঘের আশঙ্কা, পরিস্থিতি পূর্ণাঙ্গ মাত্রার যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই পক্ষকেই উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত টোর ওয়েন্সল্যান্ড বলেছেন দুই পক্ষেই পরিস্থিতি পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে। তবে ফিলিস্তিনের মানুষেরও নিরাপত্তা ও নিরাপদে থাকার অধিকার রয়েছে। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ অবশ্য বলেছেন, তার দেশের হামলা মাত্র শুরু হয়েছে। অন্যদিকে হামাস প্রধান ইসমাঈল হানিয়া বলেছেন, ‘ইসরায়েল যদি বাড়াতে চায় তাহলে আমরা তার জন্য প্রস্তুত। আর তারা থামতে চাইলে আমরা তার জন্যও প্রস্তুত।’
London Bangla A Force for the community…
