বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায়। এটি ভারতীয়, ইউরোশীয় ও বার্মা এই তিন গতিশীল বা সম্প্রসারণশীল আন্তঃমহাদেশীয় প্লেটের সংযোগ স্থলে অবস্থিত। যার মধ্যে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ রাজধানী ঢাকা। আশঙ্কা করা হচ্ছে কোন বড় ভূমিকম্প হলে, ঢাকার সমস্ত ভবনের অর্ধেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আরটিআই ইন্টারন্যাশনাল আরবান রিলিজিয়েন্স প্রকল্পের আয়োজিত পেশাদারদের জন্য ওয়েবিনার ও কর্মশালায় এসব কথা বলেন বক্তারা।
নগর স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে, ভূমিকম্পের সময়ে ঢাকা কেমন ঝুঁকির মুখোমুখি রয়েছে এবং এখানে কী ঘটবে? ক্ষয়ক্ষতি প্রতিহত করতে করণীয় তা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয় এখানে। আরবান রিলিজিয়েন্স প্রকল্পের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুল লতিফ হেলালী, বিশ্ব ব্যাংকের স্বর্ণা কাজী, আরটিআই ইন্টারন্যাশনালের ডা. কিমিরো মেগুরো, মিয়ামোটো ইন্টারন্যাশনালের ডা. কিট মিয়ামোটো, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডা. মেহেদী আহমেদ আনসারী এবং অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ডা. রকিব আহসান আলোচকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. হেলালি বলেন, ‘দুর্যোগ সুরক্ষা বাড়ানোর জন্য স্থপতি এবং প্রকৌশলী প্রত্যেকের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। সরকার ও নীতিনির্ধারকগণ, প্রযুক্তিবিদ, প্রকৌশল ও স্থপতি শিক্ষার্থী, সুশীল সমাজ, ব্যক্তিগত খাত এবং সাধারণ জনগণ সবারই দায়িত্ব রয়েছে। এটি কেবল রাজউকের দায়িত্ব নয়।’
আরটিআই ইন্টারন্যাশনালের ডা. কিমিরো মেগুরো বলেন, ‘দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার জন্য ঢাকা শহরকে আরো পরিকল্পিত করতে বসবাসকারী জনগণের মানসিকতাও দৃঢ় হতে হবে। এ ক্ষেত্রে করণীয় একটিই; তা হলো জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা। আমরা যদি প্রত্যেকে নিজে ভূমিকম্প বিষয়ে সচেতন হই এবং নিজের পরিবারকে সে বিষয়ে প্রস্তুত করি, তাহলে কিন্তু ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। তা ছাড়া ভবন তৈরির সময় নির্মাণ বিধিমালা কঠোরভাবে পালন করা, নিয়ম করে নির্দিষ্ট সময় পর পর নিজেদের ভবন পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া, সর্বোপরি জরুরি অবস্থার কথা ভেবে পরিকল্পনা করা উচিৎ।’