ব্রেকিং নিউজ
Home / বাংলাদেশ / সহিংসতার আগুনে কাঁপছে বাংলাদেশ

সহিংসতার আগুনে কাঁপছে বাংলাদেশ

imageরোববার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার নির্বাচন আর বিরোধী দলের কাছে এটা গণতন্ত্র হত্যার নির্বাচন। আবার ভোটারদের কাছে ‘একদলীয় আওয়ামী নির্বাচন’। এ কারণে নির্বাচন কলঙ্কিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বিশেষ করে নির্বাচনে উৎসবের বিপরীতে ভোটার ও কমিশনের দায়িত্বশীলদের মাছে শংকা বিরাজ করছে। দুশ্চিন্তায় পড়েছে নির্বাচন কমিশন। নিরাপত্তা-শঙ্কায় আছেন প্রার্থীরাও। ঝুঁকি আছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদেরও। নেই উল্লেযোগ্য দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক। আশঙ্কা জনমনে সংঘাত-সহিংসতার। ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক ভোটকেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সর্বত্র নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ-আতঙ্ক। বলা যায়, সহিংসতার আগুনে কাঁপছে বাংলাদেশ।

অপরদিকে, নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়তি দেখাতে ভোলার দুইটি আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া আসনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভোটার ভাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাতে চরফ্যাশন থেকে শ্রমিকলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা ভাড়ায় ভোট দেয়ার চুক্তিতে ভোলা-৩ আসনে গেছে বলে শ্রমিকলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে। ভোলা-২ আসনেও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য ভোলা সদর থেকে ভোটার ভাড়া করা হয়েছে বলে আরেকটি একটি সূত্র জানিয়েছে। ভোলা-২ ও ৩ আসনের আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ভোটারদের কেন্দ্রে উপস্থিত করার জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ উঠেছে। ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকেরা ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার জন্য চাপ, এমনকি হুমকিও দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন ভোটার। এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আলোচিত-সমালোচিত এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন। সরকার নানা কসরত করে নির্বাচনে রেখেছে জাতীয় পার্টির এ কে এম নজরুল ইসলাম তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বি।

ওদিকে, নির্বাচন বাতিলের দাবিতে শুক্রবার ১৮ দলীয় জোট নির্বাচন প্রতিহতে অবরোধের পাশাপাশি শনিবার ভোর থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা দেয়। জোটের ডাকা অবরোধ হরতাল চলছে। শাসকদলের নির্বাচন আর বিরোধী দলের প্রতিহত কর্মসূচি পালনে দেশজুড়ে সহিংসতার আগুন জ্বলছে। যেন কাঁপছে বাংলাদেশ। জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে ভোট কেন্দ্রগুলো। খবর আসছে ভোটকেন্দ্রে ককটেল ও পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে। দাগন ভূইয়ার ৭টি কেন্দ্র,কুমিল্লার বুড়িচংয়ে কেন্দ্রে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ,নাটোরের বিভিন্ন কেন্দ্রে আগুন,ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভোটকেন্দ্রে পেট্রোল বোমা, মৌলভীবাজার,কিশোরগঞ্জ,দিনাজপুর,বেলকুচি,সীতাকু-,রাজশাহী,ঝিনাইদহ,মুলাদী,মোরলগঞ্জ,বরগুনা,যশোর,নীলফামারী,সুনামগঞ্জ,টাঙ্গাইল,বগুড়া,দৌলতখান ও পিরোজপুরের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এছাড়া রাজধানীর দক্ষিণখান ভোটকেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে,নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে এবারের নির্বাচনে শুক্রবার পর্যন্ত দেশি পর্যবেক্ষকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজারের কিছু বেশি। বিদেশি পর্যবেক্ষক মাত্র চারজন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম সংসদ নির্বাচনে দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে পর্যবেক্ষক ছিলেন এক লাখ ৬০ হাজার। বিদেশি পর্যবেক্ষক ছিলেন ৫৮৫ জন।

এ অবস্থায়ও নির্বাচন কমিশনের আশাবাদ, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে।

উল্লেখ্য,১৪৭ আসনে ভোট হচ্ছে। ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হয়েছেন। ভোটার সংখ্যা ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ জন।