সাহিদুর রহমান সুহেল: ১৯৭১সালে ২৮ মার্চ বহির্বিশ্বে প্রথম প্রায় ১০ হাজার লোকের উপস্থিতিতে ঐতিহাসিক স্মলহিথ পার্কে পতাকা উত্তোলন করা হয়। এমন ঐতিহাসিক স্থানে ২০১৪ সালে প্রথম কয়েকজন দেশ প্রেমিকের উদ্যোগে ঐ ঐতিহাসিক স্থানে নিজ খরচ এবং শ্রমের বিনিময়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে মহান আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১শে ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরেই উদযাপিত হয়। বলে রাখা ভালো বর্তমান মনুমেন্ট প্রজেক্ট কমিটির উচ্চ পর্যায়ের পদবী সহ অনেকেই ছিলেন না এই প্রাথমিক কমিটিতে। তার কারনে অনেক হুমকি-ধমকি সহ একটি প্রেস কনফারেন্স শারিরীক আক্রমণের শিকার হতে হয়েছে আমাদেরকে। তখন থেকে ধারাবাহিক ভাবে ২০১৫/১৬/১৭/১৮ সালে একইভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পালন করে আসছিলাম।
তার পরবর্তীতে স্থায়ীকরনণের লক্ষে পুর্ণমতে একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করা হয় । বিভিন্ন উপ-কমিটি গঠন-কার্যক্রম ও স্থায়ীকরণের টাকা উত্তোলন প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে তুমুল বিরোধ দেখা দেয়া। বিশেষ করে জনাব মসুদ আহমদ ও মুরাদ খানের মনোমানিল্য চরম পর্যায়ে ছিল। যা বাকি সদস্য চরম বিব্রত ছিলেন। পরবর্তীতে মুরাদ খান পদত্যাগ করে ভাষা শহীদ মিনার নামে সংগঠন করে সদস্য হিসাবে কার্যক্রম ও উক্ত সংগঠন থেকে আরেকটি আবেদন যেত কাউন্সিলে ভাষা দিবস পালনের জন্য। কিন্তু বাকি সবাই
একুশ উদযাপন পরিষদে থেকে গেলাম। পরবর্তীতে দলীয় লোক বলয় বাড়ানো ও আঞ্চলিকতা চলে আসলো । এমনকি পরবর্তীতে সাধারন সম্পাদক জনাব এম এ মুনতাকিম বাংলাদেশে অবস্থান কারনে সহ-সাধারন সম্পাদককে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব না দিয়ে তাকে আল্পনা আঁকার দায়িত্ব দেয়া হলো, সে দায়িত্ব সকাল ৬ টার সময় পালন করি। এমনকি সংগঠনের সকল নিয়মকে পদদলিত করে অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় কোষাধ্যক্ষ জনাব এনামুল হক খান নেপাকে। মধ্যখানে অনেক ইতিহাস, পদত্যাগ করলাম। পরবর্তী অধ্যায়ে তৎকালীন সহকারী হাইকমিশনার জুলকারনাইনের অর্ন্তভুক্তের ইতিহাস আমার আগের লিখায় লিখেছি, এখানে আর লিখবার অবকাশ নেই। পরবর্তীতে নতুন নিযুক্ত বার্মিংহাম সহকারী হাইকমিশনার মুহাম্মদ নাজমুল হক সাহেবের কাছে আমরা কয়েকজন লিখিত দাবী করেছিলাম, অস্থায়ী শহীদ মিনার প্রক্রিয়ার সাথে জড়িত বিবাদমান সকল পক্ষ-বিপক্ষের সরাসরি আলাপ-আলোচনা করে এবং আসল ইতিহাস সংগ্রহ করে স্থায়ী নির্মাণ প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পরিকল্পনা গ্রহন করার। ঐ চিঠিটা গ্রহন করে আমাদেরকে কথা দিয়েছিলেন আমাদের সাথে আলাপ করে কমিটি করবেন। কিন্তু আমাদের না জানিয়ে, কথা না বলে হাজার পাউন্ডের সদস্য নিয়মের সংবিধান করে অতীতে এই শহীদ মিনারের (অন্য শহীদ মিনারে থাকতে পারে) সকল কার্যক্রম থেকে দুরে থাকা অনেক মানুষ গুলো আজ শহীদ মিনারের কাগজ বগলে করে ঘুরে । আর যারা ৫/৬ বছর দিন রাত পরিশ্রম, প্রচন্ড শীতের মাঝে এবং টাকা দিয়ে, প্রতিটি মিটিংয়ের জায়গা ফ্রিতে আশরাফুল ওয়াহিদ দুলাল ভাই তার হল দিয়ে সহায়তা করেছিলেন। এমনকি অতিরিক্ত ব্যয় আবার চাঁদা হিসাবে দিয়ে এবং রাত ৩টায় হাজার মন ওজনের জেনারেটার টেলানো লোকগুলো আজ বাইরে! আমাদের না থাকাটা তারা প্রাপ্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। একুশ উদযাপন কমিটির অনেকেই আজ আমাদের দেখলেই ফাইল লুকিয়ে ফেলেন।
শহীদ মিনার হোক এটা আমাদের কামনা। বরং আমাদের কারনে না হোক সে উপলব্ধি আমাদের সবসময় ছিল। সহকারী হাই কমিশনারের এ ওয়াদার কথা, চিঠি এবং সার্বজনীন করার ব্যর্থতার কথা আমাদের মনে থাকবে। কোন সমস্যার সমাধানে হাইকমিশনে বিচার প্রার্থী হওয়ার আগে, নিজেরা সমাধানের পথ খুঁজা সহ আমাদের কমিউনিটিকে আরো শক্তিশালী হতে হবে। তা না হলে পাবলিক সার্ভিস অফিসারের সামনে হাত খসলিয়ে নতজানুই আমাদের পথ চলা থেকেই যাবে।
টাকা দিয়ে সদস্য পদ গ্রহন করার বিপক্ষে অবস্থান আজও অটুট। স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যয় কমিটি নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিবে কি করে আসবে, এটাই ছিল আমাদের কথা। টাকা দিয়ে সদস্য গ্রহন কিংবা বড় বড় ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত কমিটিতে থাকা আমাদেরকে সম্মানিত করে না। তেমনি একুশ উদযাপন পরিষদের সহ-সাধারন সম্পাদকের পদ থেকে আমার নিজের ইচ্ছায় নানান অনিয়ম প্রকাশ করে পদত্যাগ (যা এখনও কার্যকর হয়েছে কি না জানি না) ছিল গর্বের।