বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জরুরি সম্মেলন চলছে। সেখানে উপস্থিত আছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সসহ সরকারি অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। হঠাৎ সেখানে ঢুকে পড়লো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তি। তবে ট্রাম্প জানিয়েছেন তিনি নাকি এতে শঙ্কিত নন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শনিবার ম্যারিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে ‘কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্স’- এ অংশ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সম্মেলনেই ছিলেন ওই করোনা রোগী। তবে তিনি ট্রাম্প ও পেন্সের কাছাকাছি ছিলেন না।
হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সম্মেলনে অংশ নেওয়া ওই ব্যক্তিকে পরীক্ষা করা হলে তার শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া যায়। তবে তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছাকাছিও যেতে পারেননি।
আমেরিকান কনজারভেটিভ ইউনিয়ন জানায়, ওই ব্যক্তিকে নিউ জার্সির একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে কোয়ারেন্টাইনে করে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে তার চিকিৎসা চলছে।
হোয়াইট হাউসের বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, এ ঘটনার পর প্রেসিডেন্টসহ হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস। হোয়াইট হাউসকে নিরাপদ রাখতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে ট্রাম্প সিএনএনকে বলেছেন, ‘আমি এতে শঙ্কিত নই। মোটেও উদ্বিগ্ন নই। আমাদের আরও প্রচুর সম্মেলন হবে। আমরা অনেক ভালো আছি। আমরা এই ভাইরাস মোকাবেলায় সুন্দরভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প উদ্বিগ্ন না হলেও করোনা আতঙ্কে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতোমধ্যে সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২১ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। দেশটির ৩৮টি অঙ্গরাজ্যে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।
করোনাভাইরাসে সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার ৫৬ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ৩ হাজার ৮২৮ জন। বিশ্বের ১০৯টি দেশ ও অঞ্চলে এ ভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু চীনের মূল ভূখণ্ডেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ৭৩৫ এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ১১৯ জনের। চীনের পর করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৩৮২ এবং মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের।
চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ইতালিতে। দেশটিতে এক দিনেই ১৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৬৬ জনে। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩৭৫ জনে। এমন পরিস্থিতিতে জরুরি অবস্থা জারি করেছে ইতালি সরকার। অন্যদিকে ইরানে এখন পর্যন্ত ৬ হাজার ৫৬৬ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে ১৯৪ জন।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এ ভাইরাসে তিনজনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজন ইতালিফেরত। এদের বয়স ২০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। এ তিনজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন এমন আরও ৪০ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।