আসামের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী উলফা’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া স্বীকার করেছেন, ১৫ বছর আগে ধরা পড়া ১০ ট্রাক অস্ত্র তার সংগঠনের জন্যই বাংলাদেশ হয়ে আসামে যাচ্ছিলো। ২০০৪ সালে বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় দেশে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার ব্যাপারে সম্প্রতি সময় সংবাদকে বিস্তারিত বলেছেন সাবেক এই গেরিলা নেতা।
আপাতদৃষ্টিতে শান্ত আসাম এক সময় ছিলো চরম অশান্ত। স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে অস্থিরতা তৈরি করে রাখে গেরিলা সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম, উলফা।
এ আন্দোলনের মূলে থাকা মানুষটি অনুপ চেটিয়া, যিনি অনেকের কাছে গোলাপ বড়ুয়া, সুনীল বড়ুয়া, ভাইজান কিংবা আহমেদ নামে পরিচিত। ১৯৭৯ সালে উলফার প্রতিষ্ঠাতাদের একজন তিনি। নিজ দেশে গ্রেফতারি পরোয়ানার মুখে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে ধরা পড়েন অনুপ। ৭ বছরের সাজা হলেও ভারতে ফিরে যেতে না চাওয়া, বাংলাদেশে রাজনৈতিক আশ্রয় দাবিসহ নানা জটিলতার কারণে এদেশের কারাগারে বন্দি থাকেন দীর্ঘ ১৮ বছর। শেষ পর্যন্ত ২০১৫ সালে নভেম্বর মাসে তাকে ভারতের হাতে তুলে দেয়া হয়। আলোচনার পর পরের মাসেই গুয়াহাটি কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
অনুপের বাংলাদেশে থাকাকালীন সময়েই ২০০৪ সালে ঘটেছে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনা। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় থাকাকালীন ঘটা এ ঘটনা নিয়ে অনুপ নিজেই বলছেন, উলফার জন্যই যাচ্ছিলো এ অস্ত্র।
উলফার সাধারণ সম্পাদক অনুপ চেটিয়া বলেন, দেখেন এটা ছোট্ট কথা যে, উলফার জন্যেই এই অস্ত্র আসছিল। মিথ্যা বলে লাভ নাই। গুয়াহাটি জেলে আমি এক বছর ছিলাম। জেলে থাকার সময় আমরা পরিকল্পনা করলাম বার্মা (মায়ানমার) দিয়ে হবে না, বাংলাদেশকে ঘাঁটি করতে হবে। জেল থেকেই আমি শুরু করছিলাম।
অনুপ এখন বিচ্ছিন্নতাবাদী নন। ব্যক্তিগত জীবনে ফিরে গেলেও বাংলাদেশের সাথে উত্তর-পূর্ব ভারতের সম্পর্কের নানা রসায়ন নিয়ে আশাবাদী অনুপ।
এ বিষয়ে অনুপ চেটিয়া বলেন, আসামের ওপরে বাংলাদেশের কিছু মানুষের ভুল ধারণা আছে। আসামে বাংলাদেশবিরোধী কোন আন্দোলন কিন্তু কখনো হয়নি।
জীবনের দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে কাটানোয় এখানকার মানুষদের এখনো আপন ভাবেন বলেন জানালেন ৬২ বছর বয়সী অনুপ চেটিয়া।