প্রায় ত্রিশ বছর পর আগামী মাসে ফিরে আসছে নীল রঙের ব্রিটিশ পাসপোর্ট, বলেছে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর বারগেন্ডি বা লাল রঙের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়। ১৯২১ সালে চালু হয়েছিল নীল রঙের পাসপোর্ট এবং ১৯৮৮ সালে তৎকালীন ইউরোপীয় অর্থনৈতিক জোট বা ইউরোপীয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির সদস্য হওয়ার পর পাসপোর্ট পরিবর্তনে রাজি হওয়ার আগ পর্যন্ত তা চালু ছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিতি পাটেল বলেন, পাসপোর্ট “আবারো আমাদের জাতীয় পরিচয়ের ধারকে পরিণত হয়েছে।” তিনি বলেন, ব্রেক্সিট যুক্তরাজ্যকে “বিশ্বে নতুন পথ তৈরি করার স্বকীয় সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে” এবং “আইকনিক নীল ও সোনালী নকশায়” ফিরে যাওয়ার সক্ষমতা দিয়েছে।
১৯৮০ এর দশক পর্যন্ত যুক্তরাজ্য তাদের পাসপোর্টের রঙ পরিবর্তনের ইচ্ছুক ছিল না। কিন্তু অন্য সদস্য দেশগুলোর সাথে মিলে পরে তা পরিবর্তন করে। পাসপোর্টের নকশায় পরিবর্তন আনাটা ব্রেক্সিট সমর্থকদের মধ্যে ঐক্যমতের বিষয়ে পরিণত হয়েছিল এবং ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সরকার ঘোষণা দিয়েছিল যে, নীল পাসপোর্ট ফিরে আসবে।
‘সুপার স্ট্রেংথ’
সরকার ধারণা করছে যে, এই গ্রীষ্মকাল থেকেই নতুন করে প্রকাশ হওয়া সব পাসপোর্টের রঙ হবে নীল। ততদিন পর্যন্ত, বারগেন্ডি রঙের পাসপোর্টও থাকবে এবং ভ্রমণের ক্ষেত্রে মেয়াদ উত্তীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত সেগুলো কার্যকর থাকবে। বারগেন্ডি রঙের পাসপোর্টের কাভার বা উপরের পাতায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন লেখা রয়েছে, যদিও গত বছর পুরনো মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর পাসপোর্ট অফিস এ ধরণের কোন বর্ণনা ছাড়াই নতুন পাসপোর্ট প্রকাশ করতে শুরু করে।
নীল রঙের পাসপোর্ট তৈরি করবে জেমেলতু নামে একটি প্রতিষ্ঠান, যার মালিক থেলেস নামে একটি ফরাসি সংস্থা। এই পাসপোর্টগুলো যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের ভিত্তিতে আলাদা হবে। ব্যাক কাভার বা পেছনের পাতাটিতে ফুলেল বুটি করা থাকবে যা ইংল্যান্ড, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে , পাসপোর্টের কার্বন ফুট প্রিন্ট কমিয়ে আনা হবে। এতে আরো বলা হয়, নতুন পাসপোর্টে নিরাপত্তার বিষয়টি হালনাগাদ করা হবে যাতে থাকবে “সুপার স্ট্রেংথ” বা পলিকার্বনেটের তৈরি পাতা যেখানে ব্যক্তিগত তথ্য থাকবে। এই পাতায় এসব তথ্য সুরক্ষিত করতে প্রযুক্তি সন্নিবেশিত করা থাকবে এবং এগুলো “প্রিন্ট এবং ডিজাইনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নিরাপদ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে” যাতে পরিচয় চুরি বা নকল করা না যায়।
রঙের গুরুত্ব কেন?
পাসপোর্ট ইনডেক্সের মতে, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ভারত এবং হংকং-সহ বিশ্বের ৮১টি দেশের পাসপোর্টের রঙ নীল। ক্যারিবীয় অনেক দেশ যেমন জামাইকা, অ্যান্টিগুয়া ও বারমুডা, বার্বাডোস ও সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রানাডায় নীল পাসপোর্ট রয়েছে। ইউরোপে, আইসল্যান্ড, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার নাগরিকরা নীল পাসপোর্ট বহন করে। মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার বহু দেশ যেমন আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কোস্টারিকা, এল-সালভেদর, উরুগুয়ে এবং ভেনেজুয়েলায় নীল বেশ পছন্দের রঙ। অন্য যেসব দেশে নীল পাসপোর্ট রয়েছে সেগুলো হলো ইসরায়েল, ইরাক, সিরিয়া এবং উত্তর কোরিয়া। -বিবিসি
London Bangla A Force for the community…
