লন্ডন কেন্দ্রীয় মসজিদে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে আহত মুয়াজ্জিন রাফাত মাগলাদ তার ওপর হামলাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে, হামলার শিকার হওয়ার মাত্র একদিন পরেই মসজিদে ফিরে যোগ দিয়েছেন জুমার নামাজেও।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের রিজেন্ট পার্কের কাছের মসজিদটিতে নামাজরত অবস্থায় হামলার শিকার হন ৭০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে হামলাকারী যুবককে ধরে পুলিশে দেন অন্য মুসল্লিরা। আহত মুয়াজ্জিনকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়।
একদিন আগে রক্তাক্ত হলেও মুসলিম হিসেবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জুমার নামাজ ছাড়তে চাননি রাফাত মাগলাদ। এমনকি হামলাকারীর ওপর কোনও ক্ষোভও নেই তার।
ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার ঘটনা প্রসঙ্গে মাগলাদ বলেন, ‘মনে হলো কেউ যেন আমাকে ইট দিয়ে আঘাত করেছে। শুধু অনুভব করলাম, আমার ঘাড় বেয়ে রক্ত পড়ছে; এটুকুই। তারা (মুসল্লিরা) আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যায়। সব যেন মুহূর্তেই ঘটে গেল।’
আহত অবস্থায় মসজিদে ফেরার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, মুসলিম হিসেবে শুক্রবারের জুমার নামাজ তার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৃদ্ধ এই মুয়াজ্জিন বলেন, ‘আমি যদি এটা (জুমার নামাজ) হাতছাড়া করি, তাহলে বড় কিছু হাতছাড়া হয়ে যাবে। মুসলিম হিসেবে এটা আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
এদিন লন্ডন কেন্দ্রীয় মসজিদে জুমার নামাজে যোগ দিয়েছেন শহরটির মেয়র সাদিক খানও। এ ঘটনায় সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মসজিদ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ২৯ বছর বয়সী হামলাকারীকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড জানিয়েছে, এ ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসের যোগসূত্র নেই বলেই বিশ্বাস তাদের।
লন্ডন ফেইথ ফোরামের পরিচালক মুস্তফা ফিল্ড জানান, মুয়াজ্জিনের ঘাড়ের কাছে একবার ছুরিকাঘাত করে ওই যুবক। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন মুসল্লি নামাজ ছেড়ে হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। ফলে গুরুতর আহত হওয়া থেকে বেঁচে যান বৃদ্ধ মুয়াজ্জিন।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, মসজিদের ভেতর লাল জ্যাকেট পরা হামলাকারীকে চেপে ধরে রেখেছেন দুই পুলিশ সদস্য। আরেকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হামলায় ব্যবহৃত ছুরি পড়ে আছে পাশে একটি চেয়ারের নিচে।
মসজিদের ভেতর হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ভুক্তভোগীদের জন্য সবসময় তার শুভকামনা থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র: বিবিসি