চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর আটক তিন র্যাব সদস্যসহ পাঁচজনকে ফেরত দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিএসএফ-বিজিবি’র পতাকা বৈঠক শেষে ৫টার দিকে আশাবাড়ি সীমান্ত দিয়ে তাদের হস্তান্তর করা হয়।
হস্তান্তরকৃতরা হলেন- র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর তিন সদস্য কনস্টেবল আবদুল মতিন, কনস্টেবল রিগেন বড়ুয়া, সৈনিক ওয়াহেদুল ইসলাম এবং তাদের দুই নারী সোর্স লিজা ও তার খালা।
এর আগে এদিন সকাল সোয়া ৭টার দিকে জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আশাবাড়ি সীমান্তের ১০নং গেট দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের দায়ে তাদেরকে আটক করে বিএসএফ। এ ঘটনায় সীমান্তের ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর ভারপ্রাপ্ত কমাণ্ডার মুহিতুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, র্যাব-১১ এর সিপিসি-২ এর একটি দল বৃহস্পতিবার সকালে কুমিল্লা থেকে আশাবাড়ি এলাকায় মাদক উদ্ধার অভিযানে যায়। এসময় মাদক চোরাকারবারিদের ধাওয়ায় র্যাবের কয়েকজন সদস্য ভারতীয় সীমান্তের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে। এরপর ভারতীয় নাগরিকরা তাদের আটকের পর মারধর করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে।
এ সময় তাদের ব্যবহৃত একটি পিস্তল, ৭টি বুলেট ও অন্যান্য সামগ্রীসহ বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে তারা।
এদিকে খবর পেয়ে কুমিল্লা থেকে র্যাব ও বিজিবির পদস্থ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে আটকদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেন। এরপর বিকেল ৪টায় শুরু হয় বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠক। ওই বৈঠক শেষে বিকেল ৫টায় তাদের ফেরত দেয়া হয়। বৈঠকে ভারতের ৭৪-বিএসএফের পরিদর্শক আর.জে মিঠু ও বাংলাদেশের সংকুচাইল বিওপির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার নুরুল ইসলামসহ বিএসএফ-বিজিবির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে সীমান্তের বিজিবির সংকুচাইল বিওপির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার নুরুল ইসলাম জানান, সীমান্তের ২০৫৯নং পিলারের কাছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের রহিমপুর-আশাবাড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে র্যাব সদস্যরা ভুলবশত ভারতে প্রবেশ করলে ভারতীয়রা তাদের আটক করে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে।
তাদের ফেরত আনতে দিনভর বিএসএফের সঙ্গে পত্রবিনিময় করার পর বিকেল ৪টায় বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক শুরু হয়। পরে বিকেল ৫টার দিকে বিএসএফ ওই পাঁচজনকে হস্তান্তর করে। এসময় তারা খুবই অসুস্থ ছিলেন।
সূত্র জানায়, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার আশা বাড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে জলিল ও হাবিলের বাড়িতে যায় র্যাবের দুই মহিলা সোর্স। তাদের বাড়িতে গিয়ে মাদক সেবন শেষে ক্রয়ের অফার করলে জলিল এবং হাবিল বিক্রির জন্য রাজি হয়। পরবর্তীতে র্যাব সদস্যরা চার বান্ডিল জাল টাকা নিয়ে ভারতে প্রবেশ করে এবং ব্যবসায়ী জলিল এবং হাবিলকে আটক করতে চেষ্টা করে।
খবর পেয়ে স্থানীয় অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীরা র্যাবের তিন সদস্য এবং দুই মহিলা সোর্সকে আটক করে মারধর শুরু করে।
কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়া থানার ওসি এস এম শাহাজান কবির জানান, র্যাবের ভাষ্যমতে দুই মহিলা সোর্সের মাধ্যমে তিন র্যাব সদস্য মাদক উদ্ধার এবং দুই ব্যবসায়ীকে আটক করতে সীমান্তে যায়। সেখানে স্থানীয়রাসহ মাদক ব্যবসায়ীরা তাদেরকে আটক করে।