জম্মু-কাশ্মীর সমস্যা নিরসনে প্রথমবারের মতো ভারতের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে যাচ্ছেন মার্কিন আইন প্রণয়নকারীরা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিষয়ক সিনেট কমিটি ‘অ্যানুয়াল ফরেন অ্যাপ্রোপ্রিয়েশনস অ্যাক্ট ফর ২০২০’ প্রণয়নের আগে এক প্রতিবেদনে তারা কাশ্মীরের চলমান ‘মানবিক সংকট’ নিরসনে একটি আপিল করেন।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এই সপ্তাহে দিল্লি ঘুরে এসে এই চুক্তিটি প্রস্তাব করেন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হলেন। দিল্লি ভ্রমণে দুই দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠকে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় সংক্রান্ত কথাবার্তার পাশাপাশি কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করা হয়।
প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিনিয়র সিনেটর ও রিপাবলিকান নেতা লিন্ডসে গ্রাহাম। সেখানে বলা হয়, কাশ্মীরে চলমান মানবিক সংকট মোকাবিলায় ওই অঞ্চলের অভ্যন্তরে টেলিযোগাযোগ-ইন্টারনেট ব্যবস্থা আবার চালু করে এ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা ও কারফিউ তুলে নেওয়া দরকার। সেই সঙ্গে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার আন্দোলনে আটক বিক্ষোভকারীদেরও মুক্তি দিতে হবে।
প্রতিবেদনটির সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, এটি উপস্থাপন করা হয়েছে সেপ্টেম্বরের ২৬ তারিখে, ওই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠান ও দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রেই ছিলেন।
ভ্যান হলান জানান, চুক্তিটি সর্বসম্মতিক্রমে উপস্থাপন করা হয়েছে। এতে কাশ্মীরে চলমান সংকট নিয়ে আমরা আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি ও বুঝিয়েছি সেখানকার মানবাধিকার সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা চাই, বিষয়টি নিয়ে আমাদের উদ্বেগ ভারত সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করুক।
ভ্যান হলান নিজেই মোদীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে এই বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে চাইলেও এখনো সে পাননি বলে জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে ভ্যান হলানের সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শংকরের দেখা হয়। চলতি সপ্তাহে সিনেটর বব মেনেন্দেজের সঙ্গে দেখা করেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযুশ গয়াল। দু’জন সিনেটরই কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন।
তবে, কাশ্মীর ইস্যুতে তাদের এই উদ্বেগ ভারত সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে কি-না সেটা স্পষ্ট নয়।
জানা যায়, কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে সঠিক ধারণা পেতে শ্রীনগর ভ্রমণের অনুমতি চাইলেও প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন মার্কিন সিনেটর ভ্যান হলান।
এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, এ ধরনের আবেদন নিয়ন্ত্রণ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ৫ আগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পর থেকে কাশ্মীরে কোনো কূটনীতিক বা বিদেশি সাংবাদিককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।
শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দিল্লিতে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের এক সম্মেলনে জয়শংকর বলেন, ভারতে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অনেক ভুল তথ্য থাকায় মার্কিন নীতি নির্ধারকদের মধ্যেও এ নিয়ে ভুল ধারণা জন্মেছে। এই ভুল ধারণা দূর করতে সপ্তাহ খানেক ধরে কাজ করছেন তিনি।
London Bangla A Force for the community…
