লন্ডন ১৫ সেপ্টেম্বর’১৯ : দীর্ঘ তিন মাসের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে ১৫ সেপ্টেম্বর রোববার সফলতার সাথে সম্পন্ন হলো সার্বজনীন গোলাপগঞ্জ উৎসব যুক্তরাজ্য-২০১৯। ব্রিটেনের ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো প্রায় ৫০টির মতো সংগঠন ও বিলেতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার গোলাপগঞ্জবাসীদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে উৎসব মুখর পরিবেশে পূর্ব লন্ডনের ঐতিহাসিক ব্রাডি আর্ট সেন্টারে উৎসবটি সম্পন্ন হয়।
পূর্ব নির্ধারিত সময়ানুযায়ী দুপুর ১২ টায় ঐতিহাসিক আলতাব আলী পার্কে শান্তির প্রতিক কবুতর ও ফেস্টুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস, সার্বজনীন গোলাপগঞ্জ উৎসব যুক্তরাজ্য-২০১৯ এর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ছড়াকার নাট্যকার, একাউন্টেন্ট আবু তাহের, সদস্য সচিব মারুফ আহমদ, গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের মুরব্বিয়ান ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
দুপুর ১২:১০ মিনিটে বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানার সহকারে মূল অনুষ্ঠান স্থল ব্রাডি আর্ট সেন্টারে উপস্থিত হন আয়োজকরা। ব্রিটেনের ইতিহাসে প্রথম উপজেলা ভিত্তিক উৎসবের মূল আকর্ষণ র্র্যালী রাস্তার দুপাশে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ স্বাগত জানান।
উৎসবের ২য় পর্বের সূচনা হয় দুপুর তিন টায়। সমবেত কন্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। থিয়েটার হলটি শুরু থেকেই ছিল পরিপূর্ণ । আয়োজকরা মেইন হলে পূর্ব থেকেই প্রজেক্টারের মাধ্যমে দর্শকদের সরাসরি উপভোগের সুযোগ দেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে হলটি পরিপূর্ণ হয়ে আনন্দ উল্লাসে সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন সবাই।
জাতীয় সঙ্গীতের পর পরই ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের নিয়ে গান, উৎসব কমিটির আহ্বায়ক আবু তাহের, সদস্য সচিব মারুফ আহমদ ও অর্থ সচিব সালাহ উদ্দিন উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ।
অনুষ্ঠানের অন্তর্ভুক্ত ছিলো গোলাপগঞ্জের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে প্রমাণ্যচিত্র, সিলেটি কবিতা আবৃতি, সিলেটি বিয়ের গান, ধামাইল নৃত্য, নৌকা বাইচের গান, নৃত্য, নাইফ ক্রাইম ও ড্রাগের ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতনতা করতে সেমিনার, সিলেটি আধুনিক ও বাউল গান প্রভৃতি।
২য় পর্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বেথনাল গ্রিন ও বো আসনের এম পি রোশনারা আলী, উপস্থিত ছিলেন ক্রয়ডন কাউন্সিলের মেয়র হুমায়ূন কবির, টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের স্পিকার ভিকটোরিয়া ওভাজে, ডেপুটি মেয়র কাউন্সিলর আছমা বেগম, ডেপুটি স্পিকার আহবাব মিয়া, ওসমানী ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক শফিউর রহমান, টাওয়ার হ্যামলেট কাউন্সিলের কাউন্সিলর বৃন্দ । এ সময় উৎসব উপলক্ষে প্রকাশিত স্মারক “শিকড়ের সন্ধানে” গ্রন্থের মোড়ক উম্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত গোলাপগঞ্জের মুরব্বিয়ানদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
সঙ্গীতানুষ্ঠান পর্বে মনোমুগ্ধকর গান গেয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখেন বাংলাদেশ থেকে আগত জনপ্রিয় বাউল শিল্পি আশিক, ব্রিটেনের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আলাউর রহমান, মিতা তাহের, তন্নী, বাপ্পিতা, রাজিব, রাকা সহ আরো অনেকে। অনুষ্ঠানকে বাড়তি আকর্ষণ করতে আয়োজন করা হয় রাফ্যাল ড্র।
পুরো প্রোগ্রামটি সরাসরি “লন্ডন বাংলা” ফেসবুক এর মাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়েছিল যা সারা পৃথিবীথেকে হাজার হাজার দর্শক উপভোগ করেছেন ।
অনুষ্ঠানে গোলাপগঞ্জের বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আনোয়ার হোসেন, নুরুল ইসলাম, আজমল হোসেন, আলতাফ হোসেন বাইচ, মোঃ শামসুল হক, ফারুক আহমেদ, আমান উদ্দিন, হারুন মিয়া, মোঃ লোকমান উদ্দিন, মোহাম্মদ আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল, মোঃ শওকত আলী, তমিজুর রহমান রঞ্জু, আবজল মিয়া,সাবেক মেয়র ফারুক আহমেদ, ছয়ফুল ইসলাম, আব্দুল বারী নাছির, আব্দুন নূর, মোস্তাফিজুর রহমান চৌঃ রুহুল, মামুনুর রশিদ খান, ফয়ছল আহমেদ, আরিফ মঞ্জুর চৌঃ মিঠু, সায়াদ আহমেদ সাদ, আফসার খান সাদেক, লুৎফুর রহমান সায়াদ, সারব আলী, মোঃ দিলওয়ার হোসেন, হেলাল উদ্দিন, ফারুক আহমেদ, এনাম উদ্দিন, নুনু মোহাম্মদ শেখ প্রমুখ ।
অনুষ্ঠানটির মূল সঞ্চালনায় ছিলেন টেলিভিশনের নিউজ রিডার ও জনপ্রিয় আবৃতিকার মুনিরা পারভিন। সহযোগিতা করেন ইকবাল হোসেন বাল্মিকী, মিসবাহ মাসুম, এ কে এম আব্দুল্লাহ, তানহার আহমেদ তুহিন, শাহরিয়ার আহমদ সুমন, সিদ্দিকুর রহমান, মাসুদ আহমেদ জোয়ারদার ও মামুনুর রশিদ খান ।