প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একটি সভায় লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সাবেক দুই প্রেসিডেন্টসহ কয়েকজন সাংবাদিকের সাথে নজিরবিহীন অশোভন আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব।
এই প্রেক্ষিতে জরুরীভিত্তিতে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় সৃষ্ট ঘটনার সুষ্ঠু ও সম্মানজনক সমাধানের আগ পর্যন্ত ইউকে আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠনের কার্যক্রম ও তৎপরতার সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাঁর শনিবারের অনুষ্ঠানের বক্তব্য এবং অন্যান্য সংবাদের বেলায় তা প্রযোজ্য হবে না। এসব সিদ্ধান্তের সাথে উপস্থিত সবাই একমত পোষণ করে স্বাক্ষর প্রদান করেন।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব কার্যালয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া হাউজের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ সবাইকে মেনে চলার আহবান জানানো হয়। একই সাথে এক্ষেত্রে মিডিয়া হাউজগুলোর মালিক, কর্তৃপক্ষ ও সম্পাদকদের সহযোগিতা কামনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৩ আগস্ট, শনিবার লন্ডনে অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের এক শোকসভায় আমন্ত্রণপত্র ইস্যুর পরও প্রায় আট জন সাংবাদিকের আমন্ত্রণপত্র বাতিল করা হয়। এছাড়া প্রেসক্লাবের সাবেক দুই প্রেসিডেন্ট যথাক্রমে জনমতের প্রধান সম্পাদক ও বিডি নিউজের যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি সৈয়দ নাহাস পাশা ও জনমতের সম্পাদক নবাব উদ্দিন আমন্ত্রণপত্রসহ অনুষ্ঠানে যাওয়ার পর তাদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়। এছাড়া আগেই যাদের আমন্ত্রণপত্র বাতিল করা হয়েছিলো তাদের মধ্যে প্রেসক্লাবের ট্রেজারার ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউরোপ ব্যুরো চীফ আ স ম মাসুকসহ একাধিক পত্র-পত্রিকা এবং টিভি সাংবাদিক ও সম্পাদক রয়েছেন। আয়োজকদের এই চরম অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রেস ক্লাব প্রেসিডেন্ট ও অন্যান্য সাংবাদিক অনুষ্ঠান বর্জন করে বেরিয়ে আসেন।
ক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুহাম্মদ জুবায়েরের পরিচালনায় তাৎক্ষণিকভাবে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় ঘটনার পুরো বিবরণ তুলে ধরেন সৈয়দ নাহাস পাশা, নবাব উদ্দিন ও আ স ম মাসুম।
এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল আহমদ, প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম বাসন, ইন্ডিপিন্ডেন্ট
টিভির প্রতিনিধি হাসান হাফিজ, দর্পন সম্পাদক রহমত আলী, এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার ও বেতার বাংলার পরিচালক মোস্তাক বাবুল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের ডেপুটি ব্যুরো চীফ আফজাল হোসেন, চ্যানেল এস এর সিনিয়র রিপোর্টার ইব্রাহীম খলিল, ওয়ানবাংলা সম্পাদক ও টিভি ওয়ানের সিনিয়র রিপোর্টার জাকির হোসেন কয়েস, এনটিভির চীফ রিপোর্টার আকরাম হোসেইন, প্রবাস বাংলার সম্পাদক মাহবুব আহমদ, বাংলা ভিশনের প্রতিনিধি আব্দুল হান্নান, এসএ টিভি র বিশেষ প্রতিনিধি হেফাজুল করিম রাকিব, জনমতের কমিউনিটি এডিটর ইমরান আহমদ, ৫২ বাংলা টিভি র সম্পাদক আনোয়ারুল ইসলাম অভি ও রিপোর্টার সামসুর রহমান, এল বি
টিভির সিনিয়র রিপোর্টার আলাউর খানসহ প্রমুখ ।
সভায় গৃহীত উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তসমূহ:
১/ যেহেতু অনুষ্ঠানের আয়োজক যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ, (প্রেসিডেন্ট সুলতান শরীফ ও সেক্রেটারি সৈয়দ ফারুক স্বাক্ষরিত আমন্ত্রণপত্র) তাই তাদেরকেই এই ঘটনার জন্য জবাবদিহি করতে হবে এবং নাম বাতিলের গ্রহণযোগ্য কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে।
২/ ইউকে আওয়ামী লীগকে অবশ্যই এই চরম দায়িত্বহীন ও নজীরবিহীন আচরণের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
৩/ সংবাদপত্রগুলো এক সপ্তাহ তাদের প্রথম পাতায় প্রতীকী প্রতিবাদ প্রকাশ করবে।
৪/ ঘটনাসংশ্লিষ্ট সভায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ও সংবাদ তাঁর সম্মানে যথার্থভাবে প্রচার ও প্রকাশ করা হবে। তবে আয়োজক সংগঠন ও এর নেতৃবৃন্দের নামের উল্লেখ না করার পাশাপাশি তাদের ছবি ও ফুটেজ প্রচার ও প্রকাশ করা হবে না।