রাজধানীর উত্তরায় জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রবের বাসায় গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার বৈঠক বসে। পারস্পরিক অবিশ্বাস, মতবিরোধ, একে-অন্যের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠিত ওই জরুরি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি, যুক্তফ্রন্টের তিন দল ও গণফোরামের নেতারা।জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের দুই শীর্ষ নেতা অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং ড. কামাল হোসেনরা বৈঠকে ছিলেন না। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন অধ্যাপক বি. চৌধুরীর ছেলে ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি. চৌধুরী।
বৈঠকে বিএনপি থেকে উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মওদুদ আহমদ। গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুলতান মনসুর, বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় নেতা ওমর ফারুক, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, শহীদুল্লাহ কায়সার, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন। সাধারণত ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের বৈঠকে প্রতিনিধি হিসেবে থাকেন বিকল্প ধারার অন্যতম নেতা মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান। কিন্তু গতকাল ওই প্রতিনিধি হিসেবেই বৈঠকে উপস্থিত হয়েছিলেন মাহী বি. চৌধুরী। আর মাহীকে দেখে ভুত দেখার মতোই অনেকটা চমকে ওঠেন অন্যান্য নেতারা।
ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, বৈঠক চূড়ান্ত করা ঘোষণাপত্রে আপত্তি করেছেন মাহী। তিনি বলছেন, ‘প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে স্বাধীনতাবিরোধীরা’ ঐক্য প্রক্রিয়ায় থাকতে পারবেন না। অন্যান্য নেতারা শুধু ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ কথাটি রাখার পক্ষে। তবে মাহী নিজেরে সিদ্ধান্তেই অটল। কোনোভাবেই তিনি শুধু ‘স্বাধীনতাবিরোধী’ কথাটি রাখতে রাজি নন।
গতকালের বৈঠকে সরকার গঠনের কাঠামো নিয়েও আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে মাহী বি. চৌধুরীর বক্তব্য হচ্ছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকতে হবে। এমন না করা হলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাহী বলেন, হয়তো আজ আমরা আন্দোলন করলাম। কাল আবার ২০ দল অন্যকিছু করবে। কাজের আন্দোলন ও নির্বাচন নিয়ে একসঙ্গে বিশদ পরিকল্পনা করতে হবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। গতকালের বৈঠকে এ বিষয়ে মীমাংসা হয়নি বলেই জানাচ্ছে সূত্রগুলো।
ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ঐক্য প্রক্রিয়ায় বৈঠকে মাহীর অবস্থান ও বক্তব্য নিয়ে সেখানকার অন্য নেতাদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হয়। তাই বৈঠক শেষে ঐক্যের নেতাদের পক্ষ থেকে যুক্তফ্রন্টকে জানানো হয়, আগামীতে কোনো বৈঠকে যেন মাহী বি. চৌধুরী না থাকেন।
Source: বাংলা ইনসাইডার