সাভারের আশুলিয়ায় এক বাউল শিল্পীকে ১৭ ঘণ্টা আটকে রেখে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তবে একদিন পার হলেও ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে না পাঠানোয় সন্দেহ পোষণ করেছেন ওই ভুক্তভোগী। তার অভিযোগ, পুলিশ প্রভাবশালীদের পক্ষ নিয়ে ঘটনা মীমাংসার চেষ্টা করছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ৪টার দিকে আশুলিয়ার পলাশবাড়ী এলাকায় ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন ভুক্তভোগীকে সাদা কাগজে স্বাক্ষরের অনুরোধ করছেন। এ সময় সাংবাদিকদের দেখে ‘হতচকিত’ হয়ে উঠেন ওই কর্মকর্তা। কেন মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে হবে ও ভুক্তভোগীকে ২৮ ঘণ্টা পরও কেন ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়নি এমন প্রশ্নে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন এসআই বেলায়েত হোসেন।
পরে ভুক্তভোগীকে মেডিকেল পরীক্ষা করা হবে এমন শর্তে থানায় নিয়ে যান সাদা পোশাকে আসা ওই এসআই।
এর আগে ভুক্তভোগী জানান, বুধবার সকাল ১০টার দিকে গাজীরচট এলাকায় তার সঙ্গীয় কালামকে (ঢোল বাদক) নিয়ে মনির নামে এক ব্যক্তির কাছে পাওনা টাকা চাইতে যান তিনি। এ সময় বাদশা ভূইয়া ও সুজন ভূইয়া নামে দুই ব্যক্তি তাকে বাড়ির একটি কক্ষে আটকে রাখে।
এরপর কালাম নামে একজন খুঁজতে গেলে তাকেও আটকে রাখা হয়। পরে কালামকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে ১৯ হাজার টাকা ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয় তারা। এরপর সেই টাকা দিয়ে মাদক ও যৌন উত্তেজক ওষুধ কেনেন বাদশা ও সুজন।
পরে ওই বাউল শিল্পীকে জোরপূর্বক মাদক ও যৌন উত্তেজক ওষুধ সেবন করানোর চেষ্টা করা হয়। এতেও কাজ না হওয়ায় বেদম প্রহার করা হয়। পরে ১৭ ঘণ্টা আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণের পর বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়া থানায় মামলা করলে পুলিশ রাতেই অভিযুক্ত বাদশা মিয়াকে গ্রেফতার করে।
কিন্তু এরপর থেকে পুলিশ প্রভাবশালীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি লোকজন দিয়ে মীমাংসার জন্য তাকে সাদা কাগজে স্বাক্ষরের জন্য নানাভাবে চাপ দিতে থাকে বলে জানান ওই ভুক্তভোগী।
তবে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রিজাউল হক ঘটনাটি ভিত্তিহীন উল্লেখ করে বলেন, গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী তাদের কিছু না জানিয়েই থানা থেকে চলে গিয়েছিল। তাই মেডিকেল পরীক্ষার জন্য দেরি হয়েছে।