তলানিতে পৌঁছা সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে টানাপোড়েন সৃষ্টির চেষ্টা করছে পাকিস্তান। দেশটির গণমাধ্যমগুলোতে পাকিস্তানি কূটনৈতিক সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করার চিন্তাভাবনার খবর প্রকাশিত হচ্ছে।
সেখানে বলা হচ্ছে, ঢাকায় পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে মনোনীত কূটনীতিক সাকলাইন সায়িদার ‘অ্যাগ্রিমো’ (নিয়োগসংক্রান্ত চুক্তি) চূড়ান্ত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশ সময় নেওয়ায় ইসলামাবাদ বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বহিষ্কারের কথা বিবেচনা করছে।
অন্যদিকে ঢাকায় সর্বশেষ পাকিস্তানের হাইকমিশনার রাফিউজ্জামান সিদ্দিকি তাঁর দেশে গণমাধ্যমের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য করেছেন।
সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, পাকিস্তানের গণমাধ্যমের খবর ও সাবেক হাইকমিশনারের বক্তব্য তাদের নজরে এসেছে। অতীতে বিভিন্ন সময় যুদ্ধাপরাধের বিচার ও চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে রায় ও সেগুলো কার্যকর করাকে ঘিরে পাকিস্তান প্রতিক্রিয়া দেখানোর চেষ্টা করেছে এবং বাংলাদেশ এর কড়া জবাব দিয়েছে। এবার পাকিস্তানের এমন উস্কানি এসেছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার রায়ের প্রাক্কালে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কূটনীতিক কালের কণ্ঠকে বলেন, সন্ত্রাসে মদদ, জঙ্গি অর্থায়ন এবং জঙ্গিবাদে কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা, অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপসহ বিভিন্ন ইস্যুতে পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তলানিতে পৌঁছেছে। পাকিস্তান শুধু দক্ষিণ এশিয়ায় নয়, পুরো বিশ্বেই সন্ত্রাসের মদদদাতা হিসেবে চিহ্নিত।
দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) শীর্ষ সম্মেলন পাকিস্তানে হওয়ার কথা থাকলেও সন্ত্রাসে সম্পৃক্ততার কারণে সার্কের বেশির ভাগ সদস্য ওই দেশটিতে সম্মেলনে যোগ দিতে রাজি নয়। এমন প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান যদি বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করে, তবে বড় ধরনের ভুল করবে।
এদিকে পাকিস্তানের সাবেক হাইকমিশনার রাফিউজ্জামান সিদ্দিকি গত সপ্তাহে বিতর্কিত এক মন্তব্যে বলেছেন, শেখ হাসিনা নয়াদিল্লির মত ছাড়া কোনো সিদ্ধান্ত নেন না। ঢাকায় পাকিস্তানের নতুন হাইকমিশনার হিসেবে মনোনীত কূটনীতিক সাকলাইন সায়িদার অ্যাগ্রিমো চূড়ান্ত করতে বাংলাদেশ দেরি করায় তিনি ওই মন্তব্য করেন।
রাফিউজ্জামান সিদ্দিকি গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ সরকারকে না জানিয়েই ঢাকায় পাকিস্তান হাইকমিশনারের দায়িত্ব ছেড়ে তাঁর দেশে ফিরে যান। পরে জানা যায়, তিনি অবসরে গেছেন।
তিনি ঢাকায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার থাকাকালে গত অক্টোবর মাসে পাকিস্তান হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে অভিহিত করে একটি ভিডিও প্রচার করেন। এর পরপরই বাংলাদেশ সরকার তাঁকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানানোর পর পাকিস্তান হাইকমিশন তাঁর ফেসবুক পেজ থেকে সেই ভিডিও সরিয়ে নেয়।