জামায়াত থাকলে ঐক্যে নেই এই শর্তের পর এবার বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ক্ষমতার ভারসাম্যের ফর্মূলা আর মাহি বি চৌধুরীর এখনই ক্ষমতার ফয়সালার মধ্যেই আটকে আছে জাতীয় ঐক্য।পিতা পুত্রের এই মনোভাবের কারণে জাতীয় ঐক্যের আত্মপ্রকাশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে বলে মনে করছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা। তবে এ বিষয়ে এখনই গুরুত্ব দিতে চান না তারা।
দলটির নেতারা মনে করেন, নিজেদের লাভ ক্ষতির এত হিসাব না করে ঐক্য হওয়াটা জরুরী। তারা আশাবাদী যে ফর্মেই হোক, জাতির স্বার্থেই এই ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে।আর তা যদি সম্ভব নাও হয় তাহলে যুগপৎ আন্দোলন হতে বাধা নেই। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে তখন যেভাবে দলগুলো আলাদা আলাদা প্লাটফর্মে থেকে অভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন করে আন্দোলন করে তার পতন ঘটিয়েছে। ঠিক সেই অনুকরণে নিরপেক্ষ সরকারে অধিনে নির্বাচনের দাবিতে সরকার বিরোধী দলগুলো দাবি আদায়ে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে এক ও অভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে বাধা নেই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন, এখনই ভাগাভাগির হিসেবে না করে মানুষের মুক্তি চাইলে জাতীয় ঐক্যে আসবে যুক্তফ্রন্ট। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঐক্য কবে হবে না হবে নির্দিষ্ট করে তা বলার সময় আসেনি।তবে আলোচনা চলছে। আলোচনার অগ্রগতিও ভালো। আমরা বিশ্বাস করি জাতির স্বার্থেই এই ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে তা যে ফর্মেই হোক।
তিনি বলেন, একটা নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে সরকার বিরোধী দলগুলো এক প্লাটফর্মে আসার একটা প্রক্রিয়া চলছে। তারা যে ৫ দফা দাবি দিয়েছে ওই দফাগুলোর সঙ্গে বিএনপির কোনো বিরোধ নেই। কারণ বিএনপিই অবাধা নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি অনেক আগে থেকেই করে আসছে। আমরা নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দাবি করেছি। নির্বাচন কমিশন পুনগঠন, সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে মোতায়েনের কথা আমরা বলেছি।
বিএনপির সঙ্গে যুক্তফ্রন্টের ইতিমধ্যে কয়েক দফায় বৈঠক হয়েছে। কিন্তু ওই সব বৈঠকেও হালে পানি পায়নি জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া। চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। বিকল্পধারার নেতাদের চাওয়া পাওয়ার হিসেব নিয়ে চলছে আলোচনা আজও।পিতা পুত্রের চাওয়ার মাত্রা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা।
এসব বিষয়ে বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, কোনো দলকে একক মেজরিটি না করার সিদ্ধান্তটা যৌথভাবে গ্রহণ করতে হবে। জোরাজুরির কিছু নেই। করলে আমরা আছি না করলে চিন্তা করতে হবে।যারা সরকারে আসবে ১৫০ এর কিছু কম সিট তাদের থাকবে। সরকারকে বুঝতে হবে আমি অন্যায় করলে বিরোধী দল যদি তার প্রতিবাদ করে তাহলে আমি ক্ষমতা হারাতে পারি।
বাবার ফর্মূলার সঙ্গে এক মত তার পুত্র মাহি বি চৌধুরী একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, এককভাবে ক্ষমতায় গেলে স্বেচ্ছাচারী হয়ে যায় ক্ষমতাসীনরা।তাদের আন্দোলন একজন ব্যাক্তিকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য নয়। একজন মানুষকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য দেশের ১৬ কোটি মানুষ আন্দোলন করে না। কে কার অধিনে গেল, কে কার অধিনে গেল না। এই চিন্তাধারা যদি ক্ষমতায় যাওয়ার আগেই থেকে থাকে তাহলে বোঝেন ক্ষমতায় গেলে কি হবে ? কিভাবে স্বেচ্ছার মুক্ত হবে বাংলাদেশ। এখনই যদি মনে করে আমি ক্ষমতায় নাই তাই কি হয়েছে। ক্ষমতা আমার কাছে আসতে হবে। এখনই ! সেই দল ক্ষমতায় গেলে আমাকে আরো বেশি অধিনস্থ হতে হবে না। তাহলে বলেন, জনগণের মুক্তি হবে, গণতন্ত্র আসবে, স্বেচ্ছার মুক্ত হবে? সবাইকে অধিনস্থ করার জন্য নয় বরং আমরা সবাই মিলে দেশটাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যই নিবার্চন করতে চাই।
তার এই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে মাহি বি চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।