ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কয়েকটি ধারা নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছেন সাংবাদিকরা। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা জানিয়েছিলেন অন্যান্য শ্রেণিপেশার মানুষরাও। তবে সবার আপত্তি-উদ্বেগ উপেক্ষা করেই এই আইন জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। এরপর সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানালে উল্টো ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রশ্ন করে বসেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে সাংবাদিকদের এত ভয় কেন?’
মন্ত্রীর এমন মন্তব্যে সাংবাদিকরা বিস্ময় জানিয়েছেন। তারা বলছেন, নিজের পক্ষে সাফাই গাইতেই মন্ত্রী এমন মন্তব্য করেছেন। তারাও মন্ত্রীকে পাল্টা প্রশ্ন করেছেন, সাংবাদিকদের ভয় কেন নয়?
সাংবাদিকরা বলছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিভিন্ন ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করবে। বিশেষ করে এই আইনের ৩২ ধারায় ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহকে গুপ্তচারবৃত্তি হিসেবে দেখার সুযোগ আছে। এছাড়া পুলিশের উপপরিদর্শকদেরও (এসআই) যেকোনো ডিজিটাল ডিভাইস তল্লাশি ও জব্দ করার ক্ষমতা দেওয়ায় অপপ্রয়োগের আশঙ্কাও করছেন তারা। ফলে এই ধারা নিয়ে সাংবাদিকদের শঙ্কিত না হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) সাভারের আশুলিয়ায় বেসরকারি একটি মোবাইল হ্যান্ডসেট কোম্পানির কারখানা উদ্বোধনের সময় আইসিটিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এ আইন নিয়ে সাংবাদিকদের কেন এত ভয়? তার মানে কি সাংবাদিকরা ডিজিটাল অপরাধ করবেন, আর তাদের বিচার হবে না?’ মন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বিস্মিত কণ্ঠে সাংবাদিকরা নতুন করে জানিয়েছেন তাদের উৎকণ্ঠার কথা।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি ও একুশে টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মনজুরুল আহসান বুলবুল সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা বলছি যে সাংবাদিকদের আইন নিয়ে কোনো ভয় নেই, ভয় আইনের অপপ্রয়োগ নিয়ে। আমাদের ভয় হলো আইনের অপপ্রয়োগ করে সাংবাদিকতাকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয় কি না, তা নিয়ে।’
ভয়ের কারণগুলো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, নতুন আইনের ৩ ধারায় আমাদের তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী কাজ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আবার ৩২ ধারায় অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট দিয়ে সেটার বিপরীতধর্মী অবস্থান তৈরি করা হয়েছে। এটা হচ্ছে একটা ভয়। তাহলে আমরা কোন ধারায় কাজ করব এবং কোন ধারায় আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে? দ্বিতীয় ভয়টি হচ্ছে, ৪৩ ধারায় একজন পুলিশ অফিসারকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তিনি কারও সঙ্গে কথাবার্তা না বলেই তার অনুমান থেকে যেকোনো ব্যক্তির ডিজিটাল ডিভাইস তল্লাশি করতে পারবেন, দলিল তল্লাশি করতে পারবেন। আমরা ধারণা করি, ৫৭ ধারার (আইসিটি আইনের বিলুপ্ত ৫৭ ধারা) মতো এই ধারায় পুলিশের একজন এসআইও আইনটির অপপ্রয়োগ করতে পারবেন। প্রকৃতপক্ষে আইনে এমন কিছু ধারা রাখা হয়েছে, যার অপপ্রয়োগের মাধ্যমে, অপপ্রয়োগের হুমকি দিয়ে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বাধাগ্রস্ত করা যেতে পারে।’
নতুন এই আইনের মাধ্যমে দেশকে ৯ বছর পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, ‘২০০৯ সালে যখন তথ্য অধিকার আইনটি আমরা আদায় করি বা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করি, তথ্য অধিকার আইনটি আমরা প্রতিষ্ঠিত করি, তখন অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ছিল সাংবাদিকদের জন্য বড় বাধা। ২০০৯ সালে আমরা যে বাধাটি অতিক্রম করে ভালো আইনটি করতে পেরেছিলাম, ২০১৮ সালে এসে যারা তথ্য অধিকার আইনটি প্রতিষ্ঠার ব্যাকগ্রাউন্ড জানেন না, তারা আমাদের পিছিয়ে দিলেন। এটি হয়তো অনেকেই জানেন না। আমি জানি না, মন্ত্রী মহোদয়ও এটি জানেন কি না।’
আইসিটিমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে এই সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। মন্ত্রী হলে তাদের নানারকম বক্তব্য দিতে হয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্ত্রীরা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন। উনিও মন্ত্রী হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন, যেহেতু তিনি আইনটি পাস করিয়েছেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি তো তার পক্ষেই অবস্থান নেবেন।’
জানতে চাইলে বিএফইউজে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই কথাটি মন্ত্রী কেন বলেছেন, কী ধারণা থেকে বলেছেন— এর জবাব তিনিই দিতে পারবেন। আমি মনে করি, এই আইনটি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সরকারের দায়িত্ব এই আইনের পক্ষে, বিশেষ করে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় প্রিন্ট ও টেলিভিশনে কর্মরত সাংবাদিকদের কাজে প্রতিবন্ধকতা নিয়ে অবস্থান আরও পরিষ্কার করা। যতক্ষণ না এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে, ততক্ষণ এ নিয়ে বির্তক থাকবেই। আমি মনে করি, এই আইনের আলোকে বিধি প্রণয়নের ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্তে যাওয়া প্রয়োজন।’
বিএফইউজে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব শাবান মাহমুদ বলেন, “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বাস্তব প্রেক্ষাপট কেবল সাংবাদিক সমাজ নয়, দেশের সাধারণ মানুষও উপলব্ধি করতে পারছে। বরং ‘সাংবাদিক সমাজের ভয় কোথায়’— মন্ত্রীর এমন প্রশ্নে সাংবাদিক সমাজ বিস্মিত হয়েছে।”
নতুন আইনের প্রভাবে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা দুর্লভ হয়ে উঠবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এই ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আগে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় একাধিক গণমাধ্যমকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অনেকের বিরুদ্ধে এখনও মামলা রয়েছে। হয়তো দুয়েকটি মামলায় থাকতে পারে; কিন্তু অনেক মামলার পেছনেই যৌক্তিক কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাইনি। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের ৩২ ধারায় যে গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। এই গুপ্তচরবৃত্তির অজুহাতে অনেক নিরীহ ও পেশাদার সাংবাদিক স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে বাধার মুখে পড়বেন। বিশেষ করে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা দুর্লভ হয়ে যেতে পারে।’
‘আমরা কোনোভাবেই অপসাংবাদিকতা ও হলুদ সাংবাদিকতার পক্ষে নই। আমরা কেবল বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার স্বার্থে ডিজিটাল আইনের বিতর্কিত ধারাগুলো সংশোধনীর পক্ষে মত দিচ্ছি। এবং মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই বিলে সই করার আগে এটি রিভিউ করার জন্য সুপারিশ করছি। মাননীয় মন্ত্রীর (আইসিটিমন্ত্রী) উদ্দেশে বলতে চাই, আমাদের স্বাধীন সাংবাদিকতা ও পেশাদারিত্ব এই তথাকথিত আইনের কারণে বাধাগ্রস্ত হতে পারে— এখানেই সাংবাদিক সমাজের ভয়,’— বলেন সাংবাদিক নেতা শাবান মাহমুদ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারার সম্ভাব্য প্রয়োগিক দিক তুলে ধরে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ আইনের এমন কিছু ধারায় এমন কিছু অপরাধ বর্ণনা করা হয়েছে এবং পুলিশকে এমন ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, পুলিশ কেবল সন্দেহের বশে বিনা পরোয়ানায় আমার কম্পিউটার বা আমার মোবাইল ফোন বা যেকোনো ডিজিটাল ডিভাইস তল্লাশি ও জব্দ করতে পারবে। আমি এই ফোনে কথা বলছি, সন্দেহ হলে এই ফোনটি পুলিশ নিয়ে নিতে পারবে। আমাকে আটক করতে পারবে। এটিই ভয়ের অন্যতম কারণ।’
সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, ‘এছাড়া অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট সেই ব্রিটিশ আমলের। সেটা আবার এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমি রিপোর্টার হিসেবে যে তথ্য জোগাড় করি বা কাগজপত্র সংগ্রহ করি, এর দায়ে এই আইনের আওতায় আমাকে ধরে নিতে পারবে। ওয়ারেন্ট ছাড়াই পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারবে। আমাদের ভয়ের কারণ হচ্ছে— আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারার বিভিন্ন অপরাধগুলো নতুন আইনের ভিন্ন ভিন্ন ধারায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর পুলিশকে যে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, তার যে অপপ্রয়োগ হবে না— এমন নিশ্চয়তা এই আইনে নেই।’
‘এমনকি সবশেষ সংসদীয় কমিটি যে সংশোধনী দিয়ে এই আইন পাস করতে বলেছিল, সেখানে কাউকে আটক, তল্লাশি বা জব্দ করার আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা অধিদফতরের মহাপরিচালকের অনুমোদনের প্রয়োজন উল্লেখ করা ছিল। পাস হওয়া আইনে সেই বাধ্যবাধকতাও তুলে দেওয়া হয়েছে। বলতে গেলে পুলিশকে ফ্রাংকেনস্টাইনের মতো ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে,’— বলেন ডিআরইউ সভাপতি।
এদিকে, আইসিটিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের বক্তব্যে সাংবাদিকরা বিস্মিত হয়েছেন জানালে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘সেটা কী কারণে, কিভাবে বলব? সাংবাদিকদের ভয়ের কারণটা তো ব্যাখ্যা করতে হবে আগে।’
সাংবাদিকরা বলছেন, আইনটি আপনার হাতে পাস হওয়ায় সেই ভয়ের কারণও আপনার জানার কথা— এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, ‘আইন তো থাকতে হবে। আপনি ডিজিটাল বাংলাদেশে বাস করেন। এখানে ডিজিটাল অপরাধ বলতে কি কিছু নেই? সেই অপরাধ কী দিয়ে দূর করবেন আপনি? তার জন্য আইন লাগবে।’
এই আইনে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে দেশকে ৯ বছর পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে— সাংবাদিকদের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘মাত্র ৯ না, এটা ১৯৮৩ সালের আইন।’ কিন্তু ওই আইনে কি এর আগে কেউ গ্রেফতার হয়েছে— পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন আইসিটিমন্ত্রী।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পক্ষে যুক্তি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধ করা ও এমন অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সব বিধি মেনেই আইনটি করা হয়েছে। এটা বাকস্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়নি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়নি। এবং এই আইনের ভেতরে তথ্য অধিকারের যে ধারা আছে, সেই ধারা অনুযায়ীই তথ্য পাওয়ার অধিকার সব মানুষের আছে।’
৫৭ ধারায় যত মামলা
যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনে’র তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায় মামলার সংখ্যা ৯০টি। এর মধ্যে শুধু আগস্টেই রেকর্ডসংখ্যক ৪১টি মামলা হয় এই আইনে। অন্য এক তথ্য বলছে, গত বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলার সংখ্যা ৫২টি। তবে এখন পর্যন্ত ৫৭ ধারায় কত মামলা হয়েছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে আইসিটি আইনে যত মামলা হয়েছে, তার অধিকাংশই ৫৭ ধারায়।
৫৭ বনাম ৩২
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের ৫৭ ধারার উপধারা-১-এ বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি যদি ওয়েবসাইটে বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন, যা মিথ্যা ও অশ্লীল বা সংশ্লিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় কেউ পড়লে, দেখলে বা শুনলে নীতিভ্রষ্ট বা অসৎ হতে উদ্বুদ্ধ হতে পারেন অথবা যার দ্বারা মানহানি ঘটে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটে বা ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয়, রাষ্ট্র ও ব্যক্তির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে বা করতে পারে বা এ ধরনের তথ্য কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের বিরুদ্ধে দেওয়া হয়, তাইলে তার এই কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এই ধারা উপধারা-২-এ শাস্তির কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি উপধারা (১)-এর অধীন অপরাধ করলে তিনি সর্বোচ্চ ১৪ বছর এবং ন্যূনতম সাত বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
২০০৬ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে এই আইনটি প্রণয়ন করা হয়। ওই সময় এই আইনের অধীনে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ডের বিধান ছিল। ২০১৩ সালে আনা সংশোধনীতে তা বাড়িয়ে সর্বনিম্ন সাত বছর ও সর্বোচ্চ ১৪ বছরের শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়।
এদিকে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩২ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বেআইনি প্রবেশের মাধ্যমে কোনো সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত বা সংবিধিবদ্ধ কোনো সংস্থার কোনো ধরনের অতি গোপনীয় বা গোপনীয় তথ্য-উপাত্ত, কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ধারণ, প্রেরণ বা সংরক্ষণ করেন বা করতে সহায়তা করেন, তাহলে ওই কাজ কম্পিউটার বা ডিজিটাল গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আর এই অপরাধের শাস্তি হবে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা ২৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড। একাধিকবার কেউ এই অপরাধ করলে তার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড হতে পারে। আইসিটি আইনের অন্যান্য অপরাধও নতুন আইনে বিভিন্ন ধারায় বিশদভাবে যুক্ত করা হয়েছে। নতুন আইনে গুপ্তচরবৃত্তি ও পুলিশের সর্বময় ক্ষমতাতেই সবচেয়ে বড় আপত্তি সাংবাদিক নেতাদের।
Source: সারাবাংলা