৩০ মার্চ, ২০১৬: চামড়া ও ওষুধশিল্প নগরীর মতো ছাপাখানার জন্য ঢাকার বাইরে আলাদা একটি শিল্পশহর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নে ৫০ একর জমিতে নির্মাণ করা হবে এই বিসিক মুদ্রণশিল্প নগরী। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ-সংক্রান্ত একটি প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাজধানীর শেরে বাংলানগরের এনইসির সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন।
পরে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, রাজধানীতে অপরিকল্পিতভাবে অনেক ছাপাখানা গড়ে উঠেছে। সরকার ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই ছাপাখানাগুলোকে এক ছাতার নিচে নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। ঢাকা থেকে ছাপাখানা বাইরে চলে গেলে একই সঙ্গে ঢাকায় দূষণ ও যানজটের মাত্রা কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা যায়, মুদ্রণশিল্প নগরী স্থাপনে খরচ হবে ১৪০ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানে চার ধরনের মোট ৪১৯টি শিল্পপ্লট নির্মাণ করবে সরকার। এর মধ্যে ‘এ’ টাইপের ৩৭টি, ‘বি’ টাইপের ৭৭টি, ‘সি’ টাইপের ২৫৩টি এবং বিশেষ টাইপের ৫২টি শিল্পপ্লট থাকবে। কর্মকর্তারা জানান, সারা দেশে এখন সাড়ে পাঁচ হাজার ছাপাখানা রয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীতে আছে তিন হাজার।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় এবং সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ নিয়ে গবেষণার জন্য একটি অ্যাকুয়ারিয়াম করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে বিসিক মুদ্রণশিল্প নগরী প্রকল্পসহ যেকোনো শিল্প পার্ক স্থাপনের সময় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, প্রকল্প এলাকায় জলাধার নিশ্চিত করাসহ দেশের টেকসই সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণের সময় ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন।
গতকালের একনেক সভায় এক হাজার ৪৪২ কোটি টাকার মোট আটটি প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে ৯৫৪ কোটি টাকা। বাকি টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে নেওয়া হবে। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২৩৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত ও একাডেমিক সুবিধা বাড়ানো, ২৩৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস স্থাপন, ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান সুবিধাদির আধুনিকীকরণ, ৩৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কালিয়াকৈর হাইটেক পার্কের উন্নয়ন (তৃতীয় সংশোধন), ১৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক উন্নয়ন এবং ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে রুমা-বগা লেক-কেওক্রাডং সড়ক উন্নয়ন প্রথম পর্যায় নির্মাণ প্রকল্প।