ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / নির্বাচনী সহিংসতায় সারা দেশে নিহত ১২

নির্বাচনী সহিংসতায় সারা দেশে নিহত ১২

২৩ মার্চ ২০১৬: প্রভাব বিস্তার, সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, অনিয়ম, কেন্দ্র দখল ও ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচনী সহিংসতায় পাঁচ জেলায় নিহত হয়েছে কমপক্ষে ১২ জন, আহত কয়েকশ মানুষ।

নির্বাচনের সময় যেমন, তেমনি সংঘর্ষ এবং সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ভোট পরবর্তী সময়েও। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ধানিসাফা কলেজ কেন্দ্রে রাতে ভোট গণনা শেষে সংঘর্ষ থামাতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর গুলিতে ছয়জন নিহত হয়। আহত হয় কমপক্ষে ২৫ জন।

নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করে পিরোজপুরের সহকারী পুলিশ সুপার আবু আশরাফ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।’

মঠবাড়িয়া থানার ওসি জানান, ভোট গণনা শেষে ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়ার সময় রিটার্নিং অফিসারকে অবরুদ্ধ করে ব্যালট বাক্স ছিনতাই করতে চায় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে বিজিবি এবং মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। সেসময় পুলিশের গাড়ি আটকে দিলে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আত্মরক্ষায় গুলি চালাতে বাধ্য হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

পিরোজপুরের মতো কক্সবাজারেও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নে রাতে পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নূর হোসেনের সমর্থকদের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুইজন নিহত হয়। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ সেখানেও গুলি করে।

আর নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার সদর ইউনিয়নে ভোট গণনার সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী গোলাম আবু ইছাহাকের ছোট ভাই গোলাম আবু কাউছার (৩২) নিহত হন।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে আদাউড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে সংগঠিত এ ঘটনার কারণ বা কারা গুলি করেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জেও ভোটের পর রাতে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে নিহত হয় এক নারী।

ভোটের সময় সহিংসতা
ঝালকাঠি: সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের কালিয়ান্দায় কেন্দ্র দখল নিয়ে দুই ইউপি সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কাশেম সিকদার নামে মৃত্যু হয় একজনের,  আহত হয় আরো ১০ জন। নিহত আবুল কাশেম ইউপি সদস্য প্রার্থী চুন্নু সিকদারের ভাই। আহতদের ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নোয়াখালী: বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে গুলির ঘটনা ঘটেছে। হাতিয়ার চরকিং বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা।

কুমিল্লা: দেবিদ্বারে ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বড়কান্দা কেন্দ্রের বাইরে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় পাঁচজন।

সাতক্ষীরা: কুমিরার ভাগবায় কেন্দ্র দখলের চেষ্টার সময় গুলি চালায় পুলিশ।

লক্ষ্মীপুর: রামগতি ও কমলনগর উপজেলার কয়েকটি কেন্দ্রে চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়।

বরিশাল: উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নে জামবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সংঘর্ষের পর ব্যালট বাক্স ভাংচুর করা হয়। সদর উপজেলার রায়পাসা করাপুর ইউনিয়নের উত্তর বারুখা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের চেষ্টার সময় লাঠিচার্জ করে পুলিশ।

ভোলা: বোরহানউদ্দিনের সাচরা ইউনিয়নের ৯নং কেন্দ্রে দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়। আর কুতুবা ইউনিয়নের ৫ নং বশিরভাগ এলাকায় ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

ইউপি নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে দেশের ৩৬ জেলার ১০১টি উপজেলার ৭১২টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন হয়েছে। প্রথমবার দলীয় প্রতীকের ইউপি নির্বাচনে ১৪টি রাজনৈতিক দল অংশ নিলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিলো আওয়ামী লীগের নৌকা আর বিএনপি’র ধানের শীষের মধ্যে। তবে অনেক জায়গাতেই আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরাই ছিলেন প্রধান প্রার্থীদের একজন।