ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া টাকা ফিলিপাইনের জুয়ার বাজারে, ৬ জন চিহ্নিত

বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া টাকা ফিলিপাইনের জুয়ার বাজারে, ৬ জন চিহ্নিত

১০ মার্চ, ২০১৬: নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে দশ কোটি ডলার লোপাট হওয়ার বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানী রিপোর্টটি বেরিয়েছে ফিলিপাইন ডেইলি ইনকোয়ারার পত্রিকায়। রিপোর্টে বলা হয়েছে, ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ইতিহাসে এত বড় মানি লন্ডারিংয়ের ঘটনা এটাই প্রথম। দেশটির স্থানীয় একটি ব্যাংক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং সিস্টেম এই অর্থ লেনদেনের ঘটনায় জড়িত বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। রিপোর্টে বলা হয়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম ৮১ মিলিয়ন ডলার ট্রান্সফার করা হয়। খবর বিবিসি’র

নিউইয়র্ক ফেডারেল রিজার্ভ থেকে প্রথম অর্থ যায় যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি ব্যাংকে। এই ব্যাংকগুলো হচ্ছে – ব্যাংক অব নিউইয়র্ক, সিটি ব্যাংক এবং ওয়েলস ফার্গো ব্যাংকে। তারা এই অর্থ পাঠায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকে। ফিলিপাইনের মাকাটি শহরের যে শাখায় এই বিপুল পরিমাণ অর্থ আসে, সেই শাখার প্রধান কর্মকর্তা বিষয়টি ব্যাংকের উর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন।
এই লেনদেনের প্রত্যেকটি ধাপ সম্পর্কে এই ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আগাগোড়াই জানতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এই ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা লোরেনযো ট্যান অভিযোগ অস্বীকার করছেন। ব্যাংকটি এই অর্থ পাচারের ঘটনার তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে। পুরো ঘটনাটি এখন তদন্ত করে দেখছে ফিলিপাইনের সিনেট, ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন এবং ফিলিপাইনের ‘এমিউজমেন্ট এন্ড গেমিং কর্পোরেশন’ যারা সেখানকার জুয়ার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে।

ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ডলার চুরির সাথে জড়িত ৬ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফিলিপাইনের অর্থ পাচার কাউন্সিল তাদেরকে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে ৫ জনের অ্যাকাউন্ট রয়েছে ফিলিপাইনের রিজাল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনে (আরসিবিসি)। ব্যাংকটির কর্মকর্তারা ও জুয়াড়িদের যোগসাজেশ রয়েছে বাংলাদেশের ১০ কোটি ডলার চুরির সাথে।

বুধবার আরসিবিসি এক বিবৃতিতে বলেছে তাদের মাকাতি সিটির জুপিটার শাখায় বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া ১০ কোটি ডলারের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার জমা করা হয়েছে। তারপরই ব্যাংটি ও জুয়াড়িদের এতে যোগসাজেশের ধারণা করা হয়।

তবে আরসিবিসির প্রেসিডেন্ট ও সিইও লরেনজো ট্যান এর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের অর্থ চুরি ও পাচারের সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। আরসিবিসির কর্পোরেট ভাইস প্রেসিডেন্ট সিজার ভিরাটা বলেছেন, ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার জমা হওয়ার বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেছেন, আরসিবিসি সব সময় অ্যাকাউন্টের গোপনীয়তা রক্ষা করে। এক্ষেত্রেও তারা তাদের গোপনীয়তার নীতি মেনে চলবে। এছাড়াও বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ব্যাংকার্স নীতি তারা মেনে চলে বলে জানিয়েছেন ভিরাটা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া অর্থ আরসিবিসিতে জমা করার জন্য ফিলিপাইনের অন্য চারটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছে জমাকারীরা। বিষয়টি ফিলিপাইনের অর্থ পাচার কাউন্সিল ও ব্যাংকার এসোসিয়েশন খতিয়ে দেখছে।

নিউ ইয়র্কের ফেডারেল বিজার্ভ ব্যাংক থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে চুরি হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০ কোটি ডলার (প্রায় ৮শ কোটি টাকা) এর মধ্যে প্রায় ২শ কোটি টাকা গেছে শ্রীলঙ্কায়। সেগুলো উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের স্থানীয় গোয়েন্দারাও বিষয়টির তদন্ত শুরু করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কর্মকর্তা ও বাইরের অন্য কোম্পানির আইটির কয়েকজন কর্মীকে সন্দেহের তালিকায় রেখে নজরদারি করা হচ্ছে।