০৩ মার্চ, ২০১৬: অন্যান্য ধর্মাবলম্বিদের উপর উগ্রপন্থিদের হামলা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিমকোর্ট রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে বাংলাদেশের সংবিধান থেকে বাদ দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটেনের ডেইলি মেইল।
এতে বলা হয়, রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংবিধানে সন্নিবেশিত করার বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে করা এক রিটের শুনানি শুরু করেছে সুপ্রিমকোর্ট। হিন্দু, খ্রিস্টান ও সংখ্যালঘু শিয়াদের উপর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে শুনানিটি শুরু হয়েছে। ওইসব হামলার জন্য ইসলামী উগ্রপন্থিদের দায়ী করা হয়েছে।
ওইসব হামলার পর উগ্রপন্থি হামলার বিরুদ্ধে অনেক প্রতিবাদ-বিক্ষোভ হয়। ফলে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে বাদ দেয়ার চিন্তা করছে ঢাকা। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভেঙে গঠিত হয় বাংলাদেশ। তখন তারা ঘোষণা দিয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে।
পরে ১৯৮৮ সালে সংবিধান সংশোধন করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করা হয়। তবে এখন এটি ‘অবৈধ’ বলে আরেক ঘোষণার জন্য রয়েছে আদালতের শুনানি ও বিবেচনায়। বিষয়টিকে সংখ্যালঘু ধর্মীয় নেতারা সমর্থন করছেন।
ডেইলি মেইল’র প্রতিবেদনে বলা হয়, সংখ্যালঘু ও ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগারদের উপর হামলার বিষয়টিকে কথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস’র হামলা বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে দাবি করা হলেও বাংলাদেশ বলছে, স্থানীয় জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরাই এসব হামলার জন্য দায়ী। এতে আইএস’র কোন যোগসূত্র নেই।
যদিও যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে দিয়ে বলেছে যে, বাংলাদেশে সদস্য সংগ্রহ বাড়িয়েছে আইএস। অবশ্য বাংলাদেশের একজন পুলিশ অফিসার বলেছেন, আইএস’র দাবি করা সব হামলার ক্ষেত্রে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই নিজেদেরকে জামায়াতুল মুজাহীদিন’র সাথে সংশ্লিষ্ট বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
আইএস’র সাথে সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছেন তারা। তবে ওইসব হামলা যে জঙ্গিগোষ্ঠীর কাজ তা নিশ্চিত। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স-এর একজন পরিচালক বলেন, এসব হামলা সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপের কাজ। প্রতিবেদনটিতে বিদেশি, ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার, লেখক ও প্রকাশকদের উপর হামলার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, জানুয়ারি মাসের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। ওই নির্বাচন বর্জন করেছিল বিরোধী দলগুলো। এছাড়া ১৯৭১ সালের স্বাধিনতা যুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামির নেতাদের বিচারের কারণেও উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৯০ ভাগ মুসলিম। হিন্দু জনসংখ্যা হচ্ছে ৮ ভাগ। বাকিরা বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত।
ডেইলি মেইল-এর মূল রিপোর্ট:
http://www.dailymail.co.uk/news/article-3473136/Bangladesh-considering-abandoning-Islam-official-religion-following-wake-extremist-attacks.html