১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: আমাজানের গহীনে পাওয়া গেছে এক রহস্যময় ফুটন্ত নদী। যে নদীর পানিতে নামলেই পুরো সেদ্ধ হয়ে যাবে মানুষসহ অন্য প্রাণী। ভাবছেন, এমন নদীও হয় নাকি! প্রথমে এমন কথা ভেবেছিলেন ব্রাজিলের পরিবেশবিদ আন্দ্রে রুজোও।
ডেইলি মেইলের কাছে রুজো জানান, ফুটন্ত নদীর কথা শুনে প্রথমে তাঁর বিশ্বাস হয়নি। ১২ বছর আগে এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে তাঁর নানার কাছে প্রথম আমাজানের ফুটন্ত নদীর কথা শুনেছিলেন রুজো। তখন সেটা নিছক গল্প মনে হয়েছিল।
কিন্তু বিষয়টি তাঁর মাথায় গেঁথে ছিল। গত বছরের নভেম্বরে পেরুর অধিবাসী রুজোর এক দূর সম্পর্কের চাচা তাঁদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। কথায় কথায় রুজোর চাচা জানান, তিনি বহু আগে আমাজনের ফুটন্ত নদীর কথা শুনেছেন।
কিন্তু এই কথাতেই ভরসা করতে পারেননি ব্রাজিলের এই পরিবেশ ও ভূতত্ত্ববিদ। তাঁর ধারণা ছিল, একটী নদীর পানিকে ফোটানোর জন্য যে উত্তাপের প্রয়োজন তার জন্য আশপাশে অনেক আগ্নেয়গিরি থাকা দরকার। কিন্তু আমাজনের ধারে কাছে এমন কোনো আগ্নেয়গিরি নেই। সুতরাং এমন কিছু হওয়া সম্ভব নয়।
তবে এই ‘কল্পকাহিনীর’ উৎস জানার ইচ্ছে ছিল রুজোর। আর নিজের চোখে দেখে আসতে জানুয়ারির শুরুতে রওনা হলেন আমাজনের গভীর অরণ্যে। আর সেখানে গিয়ে তো চক্ষু চড়ক গাছ।
প্রায় ৮ দিনের হাঁটা পথ পাড়ি দেওয়ার পর পেরুতে অবস্থিত আমাজন অঞ্চলে আন্দ্রে রুজো দেখা পেলেন সেই আশ্চর্য নদীর। স্থানীয় ভাষায় ইভোরেজিলি নামে এই নদীর চার কিলোমিটার অঞ্চল থেকে ধোঁয়া উঠছে যেমন ফুটন্ত নদীর পানি থেকে ওঠে। আর নদীর জলে পড়ে রয়েছে নানারকম পশু-পাখির মৃতদেহ।
পানি পানের আশায় নদীতে নেমে তারা আর ফিরে আসতে পারেনি। প্রায় ২০ ফুট গভীর এই নদীতে হাত দিতেই রুজো টের পেয়ে যান পানির উষ্ণতা। পরে মেপে দেখেন, ঠিক ১০৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এই পানিতে একবার পড়লে মুহূর্তে সেদ্ধ হয়ে যাবে মানুষসহ অন্য যেকোনো প্রাণী।
অবশ্য বিশ্বে এমন ফুটন্ত পানির নদী কিংবা হ্রদের বিষয়টি নতুন নয়। রাশিয়া, চীন ও জাপানে এই ধরনের ফুটন্ত পানির নদী আছে। তবে আমাজানে এই নদী পাওয়ার বিষয়টিকে রহস্যজনক হিসেবে ব্যাখ্যা করেন আন্দ্রে রুজো। তাঁর ভাষ্যমতে, চীনে ইয়াংটজে নদীর রক্ত লাল বর্ণের পানির কারণ হলো পাশেই থাকা ফসফরাস উদগীরণকারী আগ্নেয়গিরি। আর এই আগ্নেয়গিরির কারণেই রাশিয়ার ইয়েকেটারিনবার্গ শহর দিয়ে প্রবাহিত ‘ওলখভকা’ নদীর পানিও টগবগ করে ফোটে।
কিন্তু আমাজানে ফুটন্ত পানির হ্রদ পাওয়ার এই বিস্ময়কর ঘটনার সঠিক কারণ কেউই ব্যাখ্যা করতে পারেনি। আর এদিকে নদীর কিনারায় বাড়ছে মৃত প্রাণী আর মাছের স্তূপ।
ভিডিও :
সূত্র: NTV online
London Bangla A Force for the community…
