১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: ফেসবুকের মাধ্যমে অভিনব পন্থায় আর্থিকভাবে স্বচ্ছল তরুণ-তরুণীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাৎ করছে একটি চক্র। চক্রটির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের র্যাব ২ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান।
তিনি বলেন, সম্প্রতি এ চক্রটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত একজন চিকিৎসকের সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় ও সখ্যতা গড়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আত্মসাৎ করে। পরে র্যাবের হাতে নাইজেরিয়ার ৩ নাগরিকসহ প্রতারক চক্রটির ৫ জন আটক হয়। আটককৃতরা হলেন মোহাম্মদ আলী (৩০), মঞ্জুর মাহমুদ (৩১), নাইজেরিয়ান ইঝুচে ফ্রাকিন (৩০), ওবি হেচৈ (৩৪) ও আইকে ফ্লাস্ক (৩৫)।
মুফতি মাহমুদ জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে ডেসমন্ড বি সেমুয়েল নামের এক ব্রিটিশ নাগরিকের সঙ্গে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত একজন চিকিৎসকের বন্ধুত্ব হয়। তাদের মধ্যে হোয়াটস অ্যাপ-এর মাধ্যমে কথাও হয়। গত ১০ ফেব্রুয়ারি মিন-রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের কুরিয়ার সার্ভিস-এর একজন প্রতিনিধি মোবাইল নম্বর ০১৭৪৭২৬৪১০১-হতে চিকিৎসককে জানান, তার নামে একটি গিফট বক্স এসেছে। এতে পরিবহন ব্যয় বাবদ ৫৬ হাজার ৫৬৬ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
পরদিন ১১ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসক ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখা হতে মিন-রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর হিসাব নং-০০১০১৭৮০৯, সোনালী ব্যাংক, উত্তরা শাখা, ঢাকা বরাবর ৫৬ হাজার ৫৬৬ টাকা জমা করেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি কুরিয়ার সার্ভিসের ওই প্রতিনিধি আবারো ফোন করে জানায়, গিফট বক্সটিতে ডায়মন্ডের অলংকার রয়েছে যার মূল্য ২ কোটি টাকা। এটি সংগ্রহ করতে হলে তাকে আরো ২ লাখ ৬২ হাজার ৯০০ টাকা আরেকটি ব্যাংক হিসাব নম্বরে প্রেরণ করতে হবে। ১৪ ফেব্রুয়ারি চিকিৎসক ওই ব্যক্তির কথা অনুযায়ি মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেড এর মিন-রো ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর একাউন্টে(হিসাব নং-০৬৪১০২১০০০০৯৮৬) টাকা জমা করেন।
ওই দিন বিকেলে তৃতীয়বার তাকে ফোনের মাধ্যম তাকে জানানো হয় যে, বক্স এর ভিতরে অনেক মূল্যবান দ্রব্যাদি থাকায় তাকে আরও ১০ লাখ ৮৩ হাজার টাকা প্রেরণ করতে হবে। গিফট বক্সের অবস্থান পরবর্তীতে জানানোর কথাও বলে তারা। টাকার পরিমাণ ও গিফট বক্সের ঠিকানা না জানায় সন্দেহ হয় চিকিৎসকের। বিষয়টি তিনি র্যাবকে জানান।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-২ প্রথমে ব্যাংক হিসাবের ২ জন মালিক মোহাম্মদ আলী (৩০) এবং মঞ্জুর মাহমুদকে (৩১) টাকা উত্তোলনকালে আটক করে। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিন নাইজেরিয়ান নাগরিককে আটক করা হয়। তাদের বৈধ কোনো কাগজ-পত্র নেই।
আটককালে তাদের কাছ থেকে ৫৩ হাজার টাকা, পাসপোর্ট, বিভিন্ন ব্যাংকের ব্লাঙ্ক চেক, ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ফোন পাওয়া যায়।
London Bangla A Force for the community…
