১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: আগামী ২২শে মার্চ থেকে ৬ ধাপে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে নানা সংশয় থাকলেও অংশ নেবে বিএনপি। আজ বিকালে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ধারাবাহিকভাবে ৪ঠা জুন পর্যন্ত মোট ৬ ধাপে ৪২৭৫টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। আগামী ২২শে মার্চ প্রথম ধাপে ৭৫২টি ইউপিতে ভোট গ্রহণ করা হবে। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, নির্বাচন ওয়াচ গ্রুপসহ রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন সম্পর্কে ইতিমধ্যে গভীর শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তারা সুস্পষ্টভাবেই বলেছেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনসমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এদেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনেকটাই সমাজিক নির্বাচনের মতো। আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার তৃণমূলে সামাজিক সম্প্রীতি আবহমানকালের ঐতিহ্য। এখানে ব্যক্তির রাজনৈতিক পরিচয়ের চেয়ে তার সমাজিক সুখ্যাতি ও সুনাম সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য লাভ করে। বিএনপিও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে দলীয় প্রতীকে ইউপিসহ যে কোন স্থানীয় সরকার নির্বাচন তৃণমূলে সামাজিক বন্ধন বিনষ্ট করবে। পরিবার, গ্রাম, পাড়া-মহল্লায় সর্বত্র দলীয় রাজনীতির সংঘাত ছড়িয়ে পড়বে। গণতন্ত্রের পথ চলাকে বিপথে চালিত করার জন্যই সরকারের মদদে নির্বাচন কমিশন এই অযৌক্তিক ও অসময়োচিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
রিজভী আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনজীবনে বিপর্যস্ত পরিস্থিতির সম্ভাবনা থাকলেও সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য ইনক্লুসিভ নির্বাচন চিরায়ত গণতন্ত্রের অঙ্গ। যদিও এখন এদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নির্বাসনে, ভোটারদের ভোটধিকার নিরুদ্দেশ, তথাপিও গণতন্ত্রের এই দুঃসময়ে সরকারের নানামুখী জুলুম, ভোট ডাকাতি, ভোট জালিয়াতির সম্ভাবনার মধ্যেও এই ইউপি নির্বাচনে অংশ নিয়ে গণতন্ত্রের সংকুচিত পরিসরকে সম্প্রসারিত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। ভয়াবহ দমন পীড়ন ও ভোটারদের ভোট প্রদানের অধিকার কেড়ে নেয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সেই ক্ষুদ্র পরিসর সম্প্রসারিত করার আন্দোলন হিসেবে বিএনপি আসন্ন ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। দ
লের কাউন্সিলের পরপর ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সমালোচনা করে রিজভী আহমেদ বলেন, একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত করা এক ব্যাপক কর্মযজ্ঞের বিষয়। নির্বাচন পরিচালনাও এক ব্যাপক কর্মকা-০। উভয় বিষয়ে দলের নেতাকর্মীরা ব্যাপকভাবে ব্যস্ত থাকেন। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২০শে মার্চ ১০টি পৌরসভায় ও ২২শে মার্চ ৭৫২টি ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি’র জাতীয় কাউন্সিলের পরের দিন পৌরসভা ও ২দিন পর ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলকে জনমনে বিভ্রান্ত করার জন্যই অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য চেয়ারম্যান মনোনয়নের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক এবং উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এই মোট ৫ জন একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নাম অনুমোদন করার জন্য সুপারিশ করবেন।