মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী এবং জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি শনিবার রাতেই কার্যকর করা হয়েছে।
ইতিহাসের দায় শোধের জন্য ফাঁসি কার্যকর করা হলেও তাদের ফাঁসিতে রচিত হচ্ছে আরেক ইতিহাস।
মাত্র কয়েক বছর আগে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী দুই রাজনীতিককে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছে।
বাংলাদেশে এটা প্রথম। আর সমসাময়িক বিশ্বে শুধু ইরাক ছাড়া অন কোনো দেশেও এমনটা দেখা যায়নি।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও মুজাহিদ ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন।
স্ব স্ব দলেও তারা ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী। বাংলাদেশের প্রধান ইসলামী দল জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল বা দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা ছিলেন মুজাহিদ। আর চট্টগ্রাম থেকে বারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী দেশের অন্যতম বৃহত্তম দল বিএনপির নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য।
এই দুই রাজনীতিকেরই ছিল দীর্ঘ ও বৈচিত্র্যময় রাজনৈতিক ক্যারিয়ার।
স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও এ নিয়ে বিতর্ক সম্ভবত আরো ৪৫ বছর বা তার চেয়েও বেশি সময় ধরে চলতে থাকবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো যুদ্ধাপরাধের বিচারকে ‘ভয়াবহ ত্রুটিপূর্ণ’ বলে দাবি করছে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে জনমতও কার্যত বিভক্ত। আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা দলগুলো ফাঁসির দাবিতে উচ্চকণ্ঠ হলেও বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামী স্বভাবতই প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে এর বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে।
এই মেরুকরণ রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে এখন সমাজজীবনের গভীরে প্রোথিত হচ্ছে, যারফলে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি গঠনের কাজ ভবিষ্যতে দুরূহ হতে পারে।
রাজনৈতিক পটপরিক্রমায় এই বিচার আরেক বিচারের পথ উন্মুক্ত করে দেয় কিনা সেটা নিয়েই উদ্বিগ্ন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
please notify me.