ছেলেটির নাম সামি আহমেদ, বয়স মাত্র ১৮ কিংবা একেবারে কাছাকাছি, টগবগে যৌবন, সবে মাত্র কলেজে, একাউন্ট্যান্সি পড়ছিলেন- ল্যাম্বেথ কলেজে, আর মাত্র চারদিন পরেই বয়স পূর্ণ হবে ১৮, থাকতেন সাউথ নরউডে। মা এক সময় লন্ডনের মেয়র ক্যানলিভিংস্টনের কম্যুনিকেশন্স অফিসে কাজ করতেন, এমনি দিনে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরুর প্রত্যয়ে মোটর সাইকেলে যাত্রা- উদ্দেশ্য রেস্টুরেন্টের চাবি মালিকের কাছ থেকে কালেক্ট, কারণ সব কিছু ঠিক টাক।
সামি আহমেদ এবং মা হাসিনা মোমতাজ কি জানতেন এই মোটর সাইকেল চড়াই শেষ মোটর বাইক। চালাচ্ছিলেন ১২৫সিসির ডালউইচ মোটর সাইকেল, লর্ডশীপ লেনে আসতে অপর প্রান্ত থেকে ৬০মাইল বেগে আসা একটি কার সরাসরি আঘাত করে সামি আহমদের মোটর বাইকে- সোজা উঠে যায় একেবারে উপরে। কার ক্রাশে সামি আহমেদ মৃত্য বরন করেন। পুলিশের খাতায় কার ক্রাশে সামি আহমদের মৃত্যু। বিপরীত দিকের ড্রাইভার ষ্টিভেন অরফোর্ড- যার ইনস্যুরেন্স ছিলোনা। পুলিশ রিপোর্টেও তাই লেখা আছে। ষ্টিভেন অরফোর্ড ইনস্যুরেন্সবিহীন গাড়ী চালাচ্ছিলেন।
কোর্টে ষ্টিভেন অরফোর্ড বলেছেন, তিন বিপরীত প্রান্ত থেকে আসা মোটর বাইক-আরোহীকে দেখেননি।
পুলিশ তদন্ত করতে গিয়ে পায়, ষ্টিভেন অরফোর্ড এর আগেও ২০১১ সালে ইনসুরেন্স ছাড়া গাড়ী চালানোর অপরাধে সাজা হয়েছিলো। ইনস্যুরেন্স ছাড়া গাড়ী চালানোর অপরাধে বা কেয়ারলেস গাড়ী ড্রাইভ করার কারণে চার্জ হতে পারে।
তিনি বলেছেন, তিনি মোটর বাইক দেখেননি, যখন দেখেন তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে।
কিন্তু ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস- সিপিএস এই কেসের উপসংহার টানেন এভাবে যে, এতে এনাফ এভিডেন্স না থাকায় সন্দেহভাজনকে কোন চার্জ বা আরো সিরিয়াস কোন চার্জ করা বিবেচিত হয়নি। বরং ষ্টিভেন অরফোর্ড তার লাইসেন্সে ৮ পয়েন্ট এবং সেই সাথে ১০ মাসের জন্য নিষিদ্ধ, আর ইনস্যুরেন্স ছাড়া গাড়ি ড্রাইভ করার জন্য ২১৫ পাউন্ড জরিমানা করেন।
মৃত সামি আহমদের মা মিসেস হাসিনা মোমতাজ দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি ক্যাম্পেইন করেছেন সিপিএস যাতে রিভিউ করেন এবং সাউথ করোনার কোর্টে ইনক্যুয়েস্টের জন্য প্রসিকিউটর যাতে দ্রুত কাজ করেন- সেটাই করেছেন।
কিন্তু করোনার শান্তা ডিওনারাইন বলেন, ষ্টিভেন অরফোর্ডের গাফিলতি প্রমাণের জন্য কোন প্রমাণের উপস্থিতি নেই, তাছাড়া সামি দ্রুত গতিথে বাইক চালাচ্ছিলেন, এবং ভক্সহল জাফিরার সাথে কোলিশনে আসেন, আরো দুটি কারের সংঘর্ষের উপস্থিতির রেজাল্টেই সামি মৃত্যু বরন করেন।
সামির মা হাসিনা মোমতাজ বলেন, যদি সামি দ্রুতবেগে বাইক চালিয়ে কারের সাথে এসে সংঘর্ষ লাগে, তাহলে সেটা সামির ফল্ট। কিন্তু সিপিএস কেস পূর্ণভাবে নজরে নেননি। অরফোর্ড বিনা ইন্স্যুরেন্সে গাড়ী চালাচ্ছিলেন, তিনি রুল ব্রেক করেছেন। ইনক্যুয়েস্টে শেষে দেখা যায়, সামি বিচার পায়নি, সন্দেহভাজন ড্রাইভারের সাজা হয়নি বা দুষ নেই- তাতে হ্নদয় হাহাকার করে উঠে।
এমন এক ম্যাসেজ, আপনি গাড়ী চালাচ্ছিলেন, আরেকজন ইনস্যুরেন্স ছাড়া গাড়ী চালালো, আপনার মৃত্যুর কারণ হলো- অথচ বিচার পেলেননা, এ কেমন এক কনসিকোয়েন্স ? আক্ষেপ সামির আম্মার।
মিসেস মোমতাজ এখন এটর্নি বরানর আবেদন করবেন কেস যাতে পূণরায় রিভিউ করা হয়।
সিপিএস এর মুখপাত্র এ ব্যাপারে বলেন, তারা সকল এভিডেন্স দেখেছেন, সাসপেক্ট এবং ভিক্টিমের ম্যানার ইনসিডেন্টের ব্যাপারটি নিয়ে সব পরীক্ষা করেছেন, ভিক্টিমের মৃত্যুর কারণ সাসপেক্ট ড্রাইভার দায়ী- সেটা ইস্টাবলিশ করতে পারিনি। আর তাই আমরা উপসংহার টেনেছি সাসপেক্ট ডাইভারকে সত্যিকারের চার্জ কিংবা আরো অধিকতর চার্জ করার জন্যে কোন এভিডেন্স উপস্থিত নয়।
উল্লেখ্য সামি কার সংঘর্ষে মৃত্যু বরন করেন গত জুনে।