সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ : কনজারভেটিভ সরকারের ক্রমাগত বেনিফিট কাট নীতির বর্তমানে জর্জ অসবোর্ণের বাজেট ২০১৫ ব্রিটেনের এথনিক মাইনোরিটি ও ব্ল্যাক জনগণের জীবন মান এবং স্বাভাবিক জীবন যাত্রাকে শুধু ব্যাহত করবেনা, তাদের নিদারুন কষ্ট এবং গরীব থেকে আরো গরীবী জীবনের মধ্যে নিপতিত করবে। আজ ব্রিটেনের চ্যারিটি সংগঠণ রানীমেইড তাদের এক বৃহত্তর পরিসরে পরিচালিত গবেষণা রিপোর্টে এমন তথ্যি প্রকাশিত হয়েছে। এথনিক মাইনোরিটি পিপল বিশেষ করে মুসলিম জনগণ সবচাইতে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে থাকবেন যেহেতু আয় কমে যাবে দারুন ভাবে।
রানীমেইড ট্রাস্টের ডিরেক্টর এবং রেসিয়াল ইকুয়ালিটির থিংক ট্যাংক খ্যাত ওমর খান এই রিপোর্ট নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন সংবাদ মাধ্যমের কাছে। তিনি বলেন, এথনিক মাইনোরিটির জনগন সাদাদের চেয়ে দ্বিগুণ হারে এফেক্টেড হবেন- ওসবর্ণের বাজেট কাট ও কৃচ্ছ্রতার নীতির কারণে। তিনি আরো বলেন, চ্যান্সেলর আগামী ২০২০ সালের মধ্যে মিনিমাম ওয়েজ ঘন্টায় ৯ পাউন্ড বৃদ্ধি করার কথা বলেছেন, কিন্তু ট্যাক্স ক্রেডিট এবং ওয়েলফেয়ার বেনিফিট সেই সাথে কাট করার কারণে এথনিক মাইনরিটির জনগণই এফেক্টেড হবেন, বিশেষ করে বেশী এফেক্টেড হবেন বাংলাদেশী জনগন।
ওমর খান বলেন, ব্ল্যাক এবং মাইনোরিটি জনগন বাজেটের মধ্যে সব চাইতে অনগ্রসর প্রাপ্ত।ঘরপ্রতি এথনিক মাইনোরিটির ১১%, ইউকের জনগনের মধ্যে ১৪%, এর মধ্যে আমরা আশা করছি ঘরপ্রতি ১৫%, ইউকেব্যাপী ইন্ডিভিজুয়ালি ২৫%, এই বাজেটের ফলে বেশী পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্থ হবেন- তাদের নিম্ন আয়, কম বয়স, শিশু দারিদ্রতা, কম সংখ্যকের পেনশন এবং অধিকহারে পার্ট টাইম কাজে হেতু।
রানীমেইড দাবী করে বলেছে, সরকারের উচিৎ হলো বেনিফিট কাটের ফলে উদ্ভুত পরিস্থিতি তথা এই যে অধিকহারে যারা এফেক্টেড হচ্ছেন, তাদের এই রেসিয়াল ইকুয়ালিটি সংক্রান্ত বিষয়ে কোয়ালিটি এসেসম্যান্ট এবং অডিট সম্পন্ন করা। রানীমেইড দাবী করে বলেছে, ২০১৫ সালের বাজেট প্রণয়নের সময় ট্রেজারি এই কাজটি করেনি, কারণ তারা ট্রেজারিকে জিজ্ঞেস করলে জবাব থেকে বিরত থাকে ট্রেজারি।
রানীমেইড আরো বলছে, জর্জ অসবোর্নের ২০২০ সালের মধ্যে ২৫ বছর বয়সী সকলের ঘন্টায় ৯পাউন্ড মিনিমাম ওয়েজ রাজনৈতিক চমক ও সমঝোতার লক্ষ্যে মূলত ভুল এক পদক্ষেপ যা গরীব জনগণকে এর ফায়দা থেকে বঞ্চিত করবে ( গরীব বলতে এখানে এথনিক মাইনোরিটি )।
রানীমেইড তাদের গবেষণায় পেয়েছে বেনিফিট কাট ও ক্যাপ, ট্যাক্স ক্রেডিট কাট, চাইল্ড বেনিফিট এর নতুন লিমিটেশন মূলত এথনিক জনগনকে আরো সূচনীয় ও দুর্বিসহ জীবনের মধ্যে ফেলে দিবে। “তাৎক্ষণিকভাবে সবচাইতে যাদেরকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ ও দুর্বিসহ জীবনের মধ্যে ফেলবে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশী এবং পাকিস্তানী জনগন- এই ট্যাক্স ক্রেডিট কাটের কুফলে পতিত হবেন”।
রানীমেইড তাদের স্টাডিতে পেয়েছেন, সাদাদের তুলনায় বাংলাদেশী জনগণ সাতভাগ বেশী পরিমাণ পার্ট টাইম কাজ করেন, আর দেশব্যাপী প্রতি তিনজনের একজন বাংলাদেশী রয়েছেন পার্ট টাইম কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন, পক্ষান্তরে তুলনামূলকভাবে ৯% ভারতীয়, ১০% ব্ল্যাক ক্যারিবিয়ান, ১২% ব্ল্যাক আফ্রিকান এবং চাইনিজ এবং ১৮% পাকিস্তানী পার্ট টাইমে আছেন।
রানীমেইড তাদের স্টাডিতে পেয়েছেন, প্রায় ২২৫,০০০ বাংলাদেশীর মধ্যে অর্ধেকই এই বেনিফিট কর্তনের ফলে ১,০০০ পাউন্ড করে হারাবেন।খান বলেছেন, অর্ধেকের বেশী বাংলাদেশী ও পাকিস্তানী – ইন্ডিভিজুয়ালি ৭৫০,০০০ তথা ২০০,০০০ মতো ঘরপ্রতি এই বেনিফিট কর্তনের ফলে সরাসরি দুর্ভোগের মধ্যে পরবেন। আর ব্ল্যাক আফ্রিকান আনুমানিক ইন্ডিভিজুয়ালি ৩০০,০০০ আর ১০০,০০০ ঘরপ্রতি এই দুর্ভোগের মধ্যে পরবেন।
রানীমেইড শিশু দারিদ্রতা সম্পর্কে বলেছে, এমনিতে বিএমই কমিউনিটির শিশুরা অধিকহারে দারিদ্রতার মধ্যে আছেন, তার উপর এই ২০১৫ বাজেটের ফলে ৪০% বাংলাদেশী শিশু, ৫০% পাকিস্তানি শিশু দারিদ্রিতায় নিপতিত হবেন।
ট্রেজারি মুখপাত্র এ ব্যাপারে বলেন, বর্তমান বাজেট মূলত উচ্চ হারের ট্যাক্স, নিম্ন আয়, হাই ওয়েল ফেয়ার ইকোনোমি থেকে নিম্ন ওয়েলফেয়ার, নিম্ন ট্যাক্স, আর উচ্চ হারের ওয়েজ এর দিকে যাত্রা যাতে বেনিফিট নির্ভরতা কমিয়ে কাজের উপর অধিকতর নির্ভরতা আর এই পরিবর্তনের মাধ্যমে ২০১৭ সাল থেকে পরিবার, হাউজহল্ড ওয়ার্কিং পিপলদের জীবন মানে পরিবর্তন ও উন্নতি শুরু করা। রেসিয়াল ইকুয়ালিটি ব্যাপারে বলেন, এইচএমটি ইকুয়ালিটির ব্যাপারে ফুললি প্রটেক্টেড এবং ডিফরেন্ট গ্রুপের ব্যাপারে ।