২৬ মে, ২০১৫ : ভুল সংবাদ পরিবেশন করায় দৈনিক প্রথম আলোকে ১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
‘ছুটি মেলেনি, কারখানার টয়লেটে সন্তান প্রসব’ শিরোনামে ১০ মে দৈনিক প্রথম আলো একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। পরে ১৩ মে এ ভুল খবরের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে আরেকটি সংশোধনী প্রকাশ করে পত্রিকাটি।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস। তিনি নিউজনেক্সটকবিডি ডটকমকে বলেন, এ ভুল সংবাদ প্রকাশ করে ভিকটিম হামিদা আক্তারকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হ
য়েছে। তাই আদালত এ আদেশ দিয়েছেন। আদেশে আগামী ১ মাসের মধ্যে ভিকটিম হামিদাকে এ ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এপেক্স কোম্পানির পক্ষে আদালতে ছিলেন অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান। প্রসঙ্গত ‘ছুটি মেলেনি, কারখানার টয়লেটে সন্তান প্রসব’ শিরোনামে ১০ মে দৈনিক প্রথম আলো একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, শনিবার দুপুরের দিকে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হরিণহাটি এলাকার অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার কারখানায় অন্তঃসত্ত্বা হামিদা আক্তার অসুস্থ বোধ করায় কারখানার লাস্টিং সেকশনের সুপারভাইজার মো. রতন মিয়ার কাছে ছুটির আবেদন করেন।
কিন্তু তাকে ছুটি না দিয়ে মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে বলেন ওই কর্মকর্তা। এক পর্যায়ে অবস্থার অবনতি হলে তিনি কারখানার ভেতরের একটি টয়লেটে যান। সেখানে যাওয়ার পর তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন ও বাচ্চা প্রসব করেন। পরে মা ও নবজাতককে উপজেলার সফিপুর মর্ডান হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে ১৩ মে ‘ভুল খবরের জন্য দুঃখিত’ শীর্ষক সংশোধনী ছাপা হয় দৈনিক প্রথম আলোতে। এতে বলা হয়, ‘ছুটি মেলেনি, কারখানার টয়লেটে সন্তান প্রসব’ শিরোনামে ১০ মে প্রথম আলোর নবম পৃষ্ঠায় অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। যথাযথভাবে যাচাই না করায় প্রতিবেদনটিতে কিছু ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছিল। ‘ছুটি মেলেনি’ এবং ‘টয়লেটে সন্তান প্রসব’ তথ্যগুলো ভুল ছিল। প্রকৃতপক্ষে কারখানার ওই নারী কর্মী ছুটি চাননি। তিনি সন্তান প্রসব করেননি, গর্ভপাত ঘটেছিল। তাই পরদিন ১১ মে ভুল তথ্য সংশোধন করে প্রথম আলোর নবম পৃষ্ঠায় ‘হামিদাকে চিকিৎসা দিচ্ছে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার কর্তৃপক্ষ’ শিরোনামে আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সে প্রতিবেদনে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার কর্তৃপক্ষের প্রতিবাদ, ঘটনা নিয়ে তাদের বক্তব্য এবং প্রতিবেদকের নিজস্ব সংশোধনীও ছাপানো হয়। অসতর্কভাবে ভুল তথ্য-সংবলিত প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।