জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারির সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিলের জন্য করা আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। মামলা দুটির পরবর্তী শুনানির জন্য ১৮ জুন দিন ধার্য করেছেন।
আজ সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালতে খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে তাঁর আইনজবীরা ছয় কার্যদিবসে তার অনুপস্থিতিতে নেওয়া সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিলের আবেদন করেন। খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর, ১ ডিসেম্বর,৮ ডিসেম্বর, ১৭ ডিসেম্বর এবং এ বছরের ৭ ও ১৫ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। এ সময় আদালত তা নামঞ্জুর করে দেন।
এর আগে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মোহাম্মদ আলী আদালতে উপস্থিত হয়ে বলেন, আসামি খালেদা জিয়া যেহেতু আদালতে উপস্থিত হয়েছেন, সেহেতু তাঁর অনুপস্থিতিতে অন্য সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়াটা বেআইনি। সে জন্য এ সাক্ষীগুলো বাতিল করা হোক।
পরে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল আদালতকে বলেন, ওনারা বারবার সময় চেয়েছেন। এর আগে খালেদা জিয়া নিরাপত্তার কারণে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি বলে তার আইনজীবীরা জানিয়েছেন। এ কারণে ওনার অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি যদি আদালতে উপস্থিত না থাকেন তবে ওনাদের আবেদন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করতে হবে। তাহলে আমরা কোন দিকে যাবো? একদিকে তাঁরা সময়ের আবেদন করবেন অন্যদিকে জেরা সাক্ষী বাতিলের জন্য আবেদন করেছেন।
কিন্তু দুদুকের আইন অনুযায়ী ৬০ দিনের মধ্যে বিচার সম্পূর্ণ করতে হবে।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দেওয়া সাক্ষ্যগ্রহণ বাতিলের আবেদন নামঞ্জুর করেন। এ সময় এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুদক।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুদক।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। [Adverts]