ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যাকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটি বক্তব্যের সমালোচনা করায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও জনপ্রিয় লেখক ড. জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে সিলেটবাসীর ব্যানারে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মিছিল থেকে জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে ‘সিলেট বিদ্বেষী জাফর ইকবাল, এই মুহূর্তে সিলেট ছাড়’, ‘হই হই রই রই, জাফর ইকবাল গেল কই’, ‘ব্লগার জাফর ইকবালের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘জাফর ইকবালের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
জাফর ইকবালকে এরআগে সিলেট বিদ্বেষী আখ্যা দিয়ে তাকে চাবুক মারার ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ সামাদ চৌধুরী। ৯ মে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেণন, ‘আমি যদি বড় কিছু হতাম তাহলে জাফর ইকবালকে কোর্ট পয়েন্টে ধরে এনে চাবুক মারতাম।’
জাফর ইকবালবিরোধী খণ্ড খণ্ড মিছিল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় সুরমা পয়েন্টে এসে এক হয়। বিকেল ৪টায় সেখান থেকে বিশাল একটি মিছিল বের হয়ে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
এই মিছিলের নেতেৃত্বে ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন। সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদসহ অন্য নেতারাও মিছিলে উপস্থিত ছিলেন।
মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন ও আসাদ উদ্দিন আহমদ। তারা বলেন, ড. জাফর ইকবাল প্রগতির নাম নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। [Adverts]
প্রসঙ্গত, ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবং খুনিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে গত ১৩ মে দুপুরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের উদ্যোগে এক মানববন্ধনে জাফর ইকবাল বলেছিলেন, ‘হত্যাকাণ্ডকে স্পর্শকাতর বিষয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় যে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন তা মৌলবাদিদের জন্য একটা গ্রিন সিগনাল। জয়ের মন্তব্যে মনে হচ্ছে- তোমরা এভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাও সরকার কিছুই করবে না। সরকার যেটা করছে এবং জয় যেটা বলেছে, সেটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। হত্যাকারীদের প্রশাসন ধরতে পারছে না, সেটা আমি বিশ্বাস করি না। এটা সরকারের ব্যর্থতা।’
জাফর ইকবাল আরো বলেছিলেন, ‘তোমরা যারা সত্যি কথা বলো, তোমদের যেকোন সময় মেরে ফেলা হবে, আমাদের মেরে ফেলা হবে, সরকার কিছুই করবে না। নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিতে হবে।’