ব্রিটেনের নির্বাচন যতই কাছে আসছে, ততই প্রতিদ্বন্ধি দলগুলির মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে কর্মীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে নির্বাচন কেন্দ্রিক চাপা উত্তেজনা। অতীতের যেকোন নির্বাচনের চেয়ে এবারের নির্বাচন হবে বেশ প্রতিদ্বন্ধিতাপূর্ণ। বিভিন্ন জরিপে দেখাগেছে এবারো এককভাবে কোন দল ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আর তাই কোন ধরনের ছাড় দিতে যাচ্ছে না প্রতিদ্বন্ধি দলগুলি। যদিও নির্বাচনে ব্রিটেনের গণতান্ত্রিক দলগুলির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অতীত ইতিহাস বেশ সুখকর। তারপরও এবারের নির্বাচনে সেই সম্পর্ক কতটুকু ধরে রাখা যাবে তা বুঝা যাবে আগামী ৭ই মে‘র নির্বাচনের পর।
এদিকে লন্ডনের আলোচিত আসন ‘ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন’ এ লেবার দলের এমপি প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রূপা আশা হককে কনজারভেটিব দলীয় লন্ডন মেয়র বরিস জনসন এর উপস্থিতিতে হেনেস্থা করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ছুটির দিন এ ঘটনা ঘটে। এতে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে লেবার ও কনজারভেটিব দলের মধ্যে। আর বাঙালীদের মনে বইছে ক্ষোভের আগুন।
জানাগেছে সেখানে কনজারভেটিভ প্রার্থী এঞ্জি ব্রে’র পক্ষে প্রচারণায় অংশ নেন লন্ডন মেয়র বরিস জনসন। একই সময়ে রুপা হক ও বরিস জনসন মুখোমুখি হলে এই ঘটনা ঘটে। রুপা হক বরিস কে কিছু একটা বলতে চাইলে কনজারভেটিভ প্রার্থী এঞ্জি ব্রের এক সমর্থক পিছন থেকে তার মুখের সামনে লিফলেট দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। পরে পিছন থেকে দুহাত টেনে ধরেন। যা ব্রিটেনের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সহবস্থান ও সম্মান জানানোর রীতিকে ধুলোয় মিশিয়ে এমন ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে রীতিমত আলোড়ন তুলেছে।
ক্ষোভে ফুঁসছেন ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিগণ। রুপা হক তার ভেরিফাইড ফেইস বুকে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন বরিস জনসনের মতো রাজনৈতিক ব্যাক্তির সামনে এমন ঘটনা একটা বাজে ইতিহাসের জন্ম দিলো। আমি আমার নির্বাচনী এলাকার জরুরী কিছু সমস্যা সমাধানের বিষয়ে মেয়রের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার সমর্থকদের এমন আচরণের প্রতিবাদ না করায় আশাহত হয়েছি। মানুষ লন্ডনের মেয়রের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করে। ব্রিটিশ এমপি প্রার্থী রুপা হককে হেনস্থা
উল্লেখ্য গত নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের কাছে হারানো আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া লেবার পার্টি। যে কারণে লেবার পার্টির পাশাপাশি দেশটিতে বসবাসকারী বাংলাদেশিরাও আশা করছেন রূপাকে নিয়ে।
গত নির্বাচনে পরাজিত হওয়াা লন্ডনের যে ১২টি আসন লেবার দল এবার ফিরে পেতে চায়, এরমধ্যে সবার শীর্ষে রূপা হকের ওই আসনটি। আবার লন্ডনের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ১০টি আসনের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে এই আসন।
দলের অন্যতম একটি ‘টার্গেট সিটে’ প্রার্থী হওয়ার কারণে বাড়তি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে রূপাকে।
লন্ডনের ইলিংয়ে জন্ম রূপার। এখানেই তিনি বড় হয়েছেন। ওই এলাকার স্কুলে পড়েছেন। এখন পরিবার নিয়ে সেখানেই থাকছেন। এবং ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন তাঁর নিজের নির্বাচনী এলাকা।ক্যামব্রীজে পড়ুয়া রূপা হক কিংস্টন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। তিনি ইলিং বারার ডেপুটি মেয়র ও ছিলেন।
ইলিং সেন্ট্রাল অ্যান্ড অ্যাকটন আসনে গতবার তিন হাজার ৭১৬ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন রক্ষণশীল দলের এঞ্জি ব্রে। ওইবার ১৪ হাজার ২২৮ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হয়েছিল লেবার দল। এঞ্জি ব্রে এবারও আসনটিতে রক্ষণশীল দলের প্রার্থী হয়েছেন। ব্রিটেনের সংবাদ মাধ্যম ও বিভিন্ন জরীপের ফলাফলে এই আসনে এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন রুপা।
source: politicalscrapbook and translated by londonbdnews24