গত ২৮ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পর্যবেক্ষণকৃত ৬১৯টির মধ্যে ৯৯ শতাংশ ভোটকেন্দ্রেই অনিয়ম হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপ (ই্ডব্লিউজিসি)।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ইডব্লিউজিসি আয়োজিত ‘ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ বিষয়ক প্রাথমিক বিবৃতি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পরিচালক ড. মুহাম্মদ আব্দুল আলিম একথা জানান।
এ নির্বাচন উল্লেখযোগ্য মাত্রায় অনিয়ম এবং সহিংসতায় ভরপুর ছিল বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভোটে বিপুলসংখ্যক ব্যালট ছিনতাই করে সিল মারা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, ভোট বাক্স দখল এবং নির্বাচনি সহিংসতার ঘটনা পরিলক্ষিত হয়।’
এসময় তিনি বলেন, ‘এসব অনিয়মের প্রতিটি ঘটনাই ভোট গ্রহণকারী কর্মকর্তা, নির্বাচনী কর্মকর্তা, স্বীকৃত পর্যবেক্ষক, প্রার্থীর এজেন্ট এবং নিরাপত্তা বাহিনির সামনেই ঘটেছে।’
নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং সততা ক্ষুণ্ন হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে দায়ী করে আলিম বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন পর্যবেক্ষকদের গতিবিধি নির্দিষ্ট করতে, কয়েকটি ওয়ার্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে কিছু বিধি-নিষেধ আরোপ করে। কোনো নোটিশ না দিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি পর্যবেক্ষকদের পর্যবেক্ষক কার্ড প্রদানে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে।’
অনিয়মের কারণে ইডব্লিউজিসি এ নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করে না বলেও জানান তিনি।
পরিকল্পিতভাবে ৩ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম সহিংসতার ঘটানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ নির্বাচনে যেসব জালিয়াতি হয়েছে তা নির্বাচনী ফলাফলকে পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।’
ঢাকা দক্ষিণে ২নং ওয়ার্ডে সকাল সাড়ে ১১টায় ১০-১২ জনের একটি দল চট্টগ্রামের মত একই ধরনের ঘটনা ঘটায়। সেসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের সহযোগিতা করে এবং কোনো ভোটারদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়নি বলেও আলিম তার লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
এসময় ৬১৯টি কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করা ইডব্লিউজিসি অনেকগুলো অনিয়ম প্রত্যক্ষ করেন বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৩৯টি, উত্তরে ৩৩টি এবং চট্টগ্রামে ৩০টি কেন্দ্রে ভয়-ভীতি প্রদর্শন, ঢাকা দক্ষিণে ৪৬টি, উত্তরে ৫৫টি এবং চট্টগ্রামে ৩৭টি কেন্দ্রে জোরপূর্বক ব্যালট পেপারে সিল মারা, ঢাকা দক্ষিণে ২৬টি, উত্তরে ৬৬টি এবং চট্টগ্রামে ৭২টি কেন্দ্রে সহিংসতা, ঢাকা দক্ষিণে ৬টি, উত্তরে ২১টি এবং চট্টগ্রামে ৩২টি কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা, ঢাকা দক্ষিণে ১৯টি, উত্তরে ২৮টি এবং চট্টগ্রামে ৩১টি কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া, ঢাকা দক্ষিণে ২টি, উত্তরে ২টি এবং চট্টগ্রামে ২টি কেন্দ্রে ভোটকেন্দ্রের ভেতর থেকে গ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ইডব্লিউজিসির কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, তালেয়া রহমান, কামরুল হাসান মঞ্জু প্রমুখ।