পাকিস্তানকে ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ঐতিহাসিক সিরিজ জিতে নিল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের করা ২৩৯ রান তাড়া করতে নেমে ৩৮.১ ওভারেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় টিম মাশরাফি। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করে অসাধারণ এই জয়ে অবদান রাখলেন ওপেনার তামিম ইকবাল। ১১৬ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিতই থাকলেন তিনি।
জয়ের জন্য ২৪০ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে সূচনাটা ভালোই করেছিল বাংলাদেশের দুই ওপেনার সৌম্য সরকার এবং তামিম ইকবাল। কিন্তু তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে জুনায়েদ খানের আউট সুইঙ্গারে ঠিকমত ব্যাট চালাতে পারেননি সৌম্য সরকরা। ব্যাটের কানায় লাগিয়ে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে সরফরাজ আহমেদের হাতে।
দলীয় ২২ এবং ব্যাক্তিগত ১৭ রানে ফিরে গেলেন সৌম্য সরকার। মাত্র ১১ বল খেলে চারটি বাউন্ডারিতে এই ১৭ রান করেন সৌম্য। অপর ওপেনার তামিম ইকবাল ৬ বল খেলে ৪ রান নিয়ে ক্রিজে রয়েছেন।
সৌম্য সরকারকে দ্রুত হারালেও দমে যায়নি বাংলাদেশ। দমে যাননি তামিম ইকবালও। বরং, রীতিমত টর্নেডো বইয়ে দিচ্ছেন পাকিস্তানি বোলারদের ওপর। একের পর এক বাউন্ডারি ছাড়া করছেন জুনায়েদ খান, রাহাত আলি কিংবা সাঈদ আজমলদের। ৬ষ্ঠ ওভারে রাহাত আলিকে, ৯ম ওভারে সাঈদ আজমলকে এবং ১০ ওভারে ওয়াহাব রিয়াজকে পরপর তিনবার করে বাউন্ডারি ছাড়া করেন তামিম।
বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ওপেনারের ব্যাটিং তাণ্ডবে ৯ ওভারেই বাংলাদেশের রান ৭০ পার হয়ে যায়। এর একটু পরই ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরির মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম। ১২ বাউন্ডারিতে এই অসাধারণ কীর্তি গড়েন তিনি।
তামিমের হাফ সেঞ্চুরিতে পাকিস্তানিদের ওপর ছড়াও হয়ে বসতে না বসতেই মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সাঈদ আজমলকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে পুরোপুরি পরাস্ত হন মাহমুদুল্লাহ। বল গিয়ে আঘাত হানে সোজা তার স্ট্যাম্পে। অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের অজুহাতে ৮ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর এটাই আজমলের প্রথম উইকেট।
রিয়াদ ফিরে গেলেও তামিমের সঙ্গে এসে জুটি বাধলেন মুশফিকুর রহিম এবং বাংলাদেশের রানের চাকা দুর্দান্ত গতিতে সচল রাখেন এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত ১১৮ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন দু’জন। এর আগেই টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে গেলেন তামিম ইকবাল। দ্বিতীয় বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করলেন তামিম। এর আগে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরি করলেও সেঞ্চুরি পেতে বেশ সময় নেন তামিম। ১০৮ বলে ক্যারিয়ারের ৬ষ্ঠ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন বাংলাদেশ ওপেনার। বাউন্ডারির মার ছিল তাতে ১৬টি। শুধু তামিম সেঞ্চুরিই করেননি। সঙ্গে হাফ সেঞ্চুরি করেছে মুশফিকুর রহিমও। ৫৭ বলে ৬টি বাউন্ডারি আর একটি ছক্কায় ক্যারিয়ারের ২২তম হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন বাংলাদেশের উইকেট রক্ষক ব্যাটসম্যান। এরপর অবশ্য ৭০ বলে ৬৫ রান করে রাহাত আলির বলে ফাওয়াদ আলমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান মুশফিক। দলের রান এ সময় ২১৮ রান।
এ রিপোর্ট লেখার সময় বাংলাদেশের রান ৩৭.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান। উইকেটে তামিম রয়েছেন ১১৩ রানে। সঙ্গে সাকিব আল হাসান রয়েছেন ৫ রানে।