ক্রিকেটারদের নিকট খোলা চিঠি
|| আরাত হোসেন রনি ||
প্রিয় বঙ্গমাতার বর্তমান সময়ের শ্রেষ্ঠ সন্তানেরা তোমাদের রইল ১৮ কোটি মানুষের প্রানঢালা শুভেচ্ছা। তোমাদের কাধে চেপে গোটা দেশ। তোমাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, নিরন্তর চেষ্টা আর বুকভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে গেছ অনন্য উচ্চতায়। তোমাদের সামনে এখন আরো কঠিন পরীক্ষা, প্রতিপক্ষ ভারত। মনে রাখবা তোমরা শুধু ক্রিকেটের দলের জন্য লড়ছ না, তোমারা লড়ছ সমগ্র বাংলাদেশের জন্য। যে দেশের মানুষের প্রতিটা মুহূর্ত কাটে অজানা সংকায় কিন্তু প্রাণ তাদের ক্রিকেটে বন্দী। মনে রাখবা তোমরা নিজেদের জন্য লড়ছ না, লড়ছ সেই সকল ক্রিকেটপ্রেমী সাধারণ মানুষের জন্য যাদের ভালবাসা অসাধারণ।
মাঠে খেলবে তোমরা ১১ জন কিন্তু প্রতিনিধিত্ব করবে ১৮ কোটি প্রানের। মনে রাখবে তোমরা একটা সমগ্র বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ অনেক কষ্ট ও সংগ্রামের ফসল। আজ এই জাতির অস্তিত্ব, মান-সম্মান, আবেগ সব তোমাদের হাতে। অনেক বয়স্ক মানুষ রয়েছেন যারা ক্রিকেট বোঝে না কিন্তু রেডিও বা টিভি সেটের সামনে বসে বসে আঙ্গুল গণনা করেন, তোমরা তাদের ভালবাসায় সিক্ত। আমাদের মা দাদীরা কখনও খেলা দেখেন না, কিন্তু খেলা শেষে বলেন, “আজ বাংলাদেশ জিতেছে মনটা খুশিতে ভরে গেছে” তোমরা তাদের ভালবাসার আদরের কেন্দ্রমনি। তোমাদের প্রতি শুভকামনা বাংলার সকল খেটে খাওয়া মুখে মুখে, তোমাদের শুভ কামনার ধ্বনি আজ ঘাটে-মাঠে, পথে প্রান্তরে। কৃষকের কন্ঠে ভাটিয়ালি গানের সুরে তোমাদের গুনগাথা, নৌকার মাঝির ভরাট কন্ঠে আজ তোমাদের বিজয়গাথা। ঋতুরাজ বসন্তের আগমনী গান ছিল তোমাদের শুভকামনায়। বসন্তের ফুলেরা তাদের সৌন্দর্য মেলে ধরেছে তোমাদের জন্যে, সকল ফুলের ঘ্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে তোমাদের বিজয়ে।
১৯৭১ এ আমাদের সোনার ছেলেরা অস্ত্র হাতে নিয়েছিল এই মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে আর আজ তোমরা ব্যাট বল হাতে নিয়েছ তার সম্মান বর্ধনের তরে। তোমরা ১৮ কোটি প্রাণের বিন্তে বাধা ১১ টি ফুল। এগিয়ে যাও দেশের জন্যে, হোক আরো একটিবার প্রানের স্পন্দনে নেচে ওঠা। গর্জে উঠো আরেকবার, আনন্দ অশ্রুতে ভেসে যাক গোটা দেশ।
জয় বাংলা, জয় ক্রিকেট, জয় মেহনতি মানুষের ভালবাসা।