মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ ১৫ নেতার মধ্যে ফাঁসির দণ্ড পেয়েছে সাত নেতা। এদের মধ্যে দণ্ড কার্যকর হয়েছে একজনের। আপিল বিভাগ আরও একজনের ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখলেও এখনও প্রকাশ হয়নি চূড়ান্ত রায়। ট্রাইব্যুনাল একজনের ফাঁসির আদেশ দিলেও আপিল বিভাগ দণ্ড কমিয়ে আজীবন কারাদণ্ড দিয়েছে।
২০১৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সারাদেশে তৈরি হয় গণ আন্দোলন যা গণজাগরণ হিসেবে পরিচিতি পায়। এরপর আইন সংশোধন করে ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অধিকার পায় সরকার। শেষ পর্যন্ত এই জামায়াত নেতার ফাঁসির দণ্ড দেয় আপিল বিভাগ আর ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর কার্যকর হয় এই রায়।
ট্রাইব্যুনালে কোনো জামায়াত নেতার ফাঁসির প্রথম রায় হয় ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি। এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি সম্পত্তি আর সরকার দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলায় সারাদেশে তৈরি হয় এক অরাজক পরিস্থিতির। তবে পুলিশ-বিজিবির কঠোর অবস্থানে কয়েক মাসের মধ্যে শান্ত হয় পরিস্থিতি। এই রায়ের বিরুদ্ধে সাঈদী আপিল করলে আংশিক কার্যকর হয় তা। আপিল বিভাগ দণ্ড কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয় এই জামায়াত নেতার।
সাঈদীর পর ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির দণ্ড পান জামায়াত নেতা মুহম্মদ কামারুজ্জামান। ২০১৩ সালের ৯ মে দেয়া এই রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াত নেতা আপিল করলেও তা গ্রহণ করেনি আপিল বিভাগ। ট্রাইব্যুনালের দেয়া দণ্ড বহাল রাখে আপিল বিভাগ। যে কোনো সময় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হবে।
২০১৩ সালের ১৭ জুলাই ফাঁসির দণ্ড পান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ। আমির মতিউর রহমান নিজামী ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলী ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর, এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলাম ফাঁসির দণ্ড পান ২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর। সব শেষ একই রায় পেলেন জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির আব্দুস সুবহান।
এর মধ্যে আপিল বিভাগে শুনানি চলছে মুজাহিদের মামলা। নিজামী, কাসেম আলী এবং আজহারের মামলা এখনও শুনানির অপেক্ষায় আছে। আর সুবহানের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবী
এছাড়া জামায়াতের সাবেক আমির প্রয়াত গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। তার মৃত্যুতে আপিলে থাকা মামলাটি নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
এছাড়া বিচার চলাকালে মারা যাওয়ায় মুক্তিযুদ্ধকালে রাজাকার বাহিনীর প্রতিষ্ঠাতা জামায়াতের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির একেএম ইউসুফের বিরুদ্ধে মামলা সমাপ্ত ঘোষণা করে নিষ্পত্তি করেছে ট্রাইব্যুনাল।
এছাড়া মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হচ্ছেন-বাচ্চু রাজাকার, মোবারক আলী, সাকা চৌধুরী, চৌধুরী মঈনউদ্দিন ও আশরাফুজ্জামন খান।
London Bangla A Force for the community…
