ছয়টি মোবাইল কোম্পানি গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সুবিধার জন্য তাদের ২৪ ঘণ্টার ফোনকল পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করতে বেশ কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ করছে। বিশ্বসেরা জার্মানির ট্রভিকর কোম্পানি যারা নজরদারি ও নিরাপত্তা সরঞ্জামাদি এবং সেবা দিয়ে থাকে তাদের সহায়তায় এ আপডেট কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। কোম্পানিটির সেবা শুধু ফোনকল-ই নয় আদান-প্রদানকৃত বার্তা ও ই-মেইল এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নজর রেখে যে কোনো তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা যাবে। মোবাইল অপারেটর কোম্পানিগুলো মিলে এজন্যে সাড়ে ১৮ কোটি টাকা খরচ করছে।
এধরনের কাজে বড় কোম্পানিগুলো বেশি এবং ছোট কোম্পানিগুলো কম খরচ করবে। ভাগাভাগি করেই কোম্পানিগুলো এধরনের খরচ করছে। মোবাইল ফোন অপারেটর এসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি নুরুল কবির নিউ এজকে বলেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ি মোবাইল কোম্পানিকে তাদের লাইসেন্সের অংশ হিসেবে বাধ্যতামূলকভাবে ঐ পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হবে।
গত দোসরা ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২টি অডিও ক্লিপ প্রচার করে বলেছিলেন বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দলের নেতাকর্মীদের ‘নাশকতার’ নির্দেশ দিচ্ছিলেন। উল্লেখ্য ক্লিপটি ২০১১ সালে ধারণকৃত। সম্প্রতি ইউটিউবে এ ধরণের একটি ভিডিও ক্লিপও পাওয়া গেছে। তাই জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সরকার এ ধরণের উদ্যোগ নিয়েছে। জার্মানির ট্রভিকর কোম্পানির এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির একটি ইউনিট ব্যবহার করে একসাথে ২০ হাজার ফোনকল রেকর্ড করা সম্ভব। একটি বেসরকারি টেলিফোন কোম্পানির একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, ‘বিভিন্ন কোম্পানির ক্ষেত্রে এ নিরাপত্তা নেয়ার সুযোগ ভিন্ন রকম। কোম্পানির বিনিয়োগ ও ব্যবসার আয়তন অনুযায়ী তা নির্ধারণ করা হয়েছে।’ ট্রভিকর’এর এই প্রযুক্তিগত সুবিধা শুধু থ্রিজি নেটওয়ার্কে সাপোর্ট করবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এ বিষয়টি জানে। তারাও বিষয়টির উপর গুরুত্ব দিয়ে এধরনের প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নে তাগিদ দিচ্ছে। এ নিরাপত্তা কেন্দ্র স্থাপন করা হবে ডিজিএফআই এর হেডকোয়ার্টার সংলগ্ন এলাকায়। আইন অনুযায়ী এ ব্যবস্থা শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করা যাবে। কিন্তু ২০০৫ এর আইন অনুযায়ী মন্ত্রণালয় যে কোন টেলিকমিউনিকেশন অপারেটরকে যে কোন সময় যে কোন ধরণের নির্দেশ দিতে পারে এবং তারা তা মানতে বাধ্য। ন্যাশনাল মনিটরিং সেন্টার যে কোন মোবাইল ফোনের নাম্বারের অবস্থান এবং অন্যান্য অবস্থা বিশ্লেষণ করতে পারে। কোনো মোবাইল কোম্পানির সার্ভারে প্রবেশ করার সুযোগ মনিটরিং সেলের নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোতেও এ ব্যবস্থা চালু আছে এবং সে দেশের মোবাইল কোম্পানিগুলো বাড়তি নিরাপত্তার স্বার্থে বেশি টাকা দিচেছ। গত বছর সরকার এমন একটি সফট্ওয়্যার কিনতে চেয়েছিল যার মাধ্যমে কোন রকম যোগাযোগ ছাড়াই যে কোন ধরণের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মোবাইল ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা যাবে। একই সময় থেকে শুরু করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এখন পর্যন্ত এমন একটি নিরাপত্তা টুল (যন্ত্রপাতি) খুুঁজছে।