দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার পরও অবরোধ হরতাল মোকাবেলায় মাঠে নামছেনা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। কেন্দ্র থেকে সুনির্দিষ্ট কিছু নির্দেশনা দেয়া হলেও তা বাস্তবায়ন না করে তৃণমূলের অধিকাংশ নেতা-এমপি-মন্ত্রী গা-বাঁচিয়ে চলছে এবং মাঠ পর্যায়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছেনা বলে অভিযোগ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও ক্ষুব্ধ। সে কারণেই এক সপ্তাহ সংসদ মুলতবি রেখে সংসদ সদস্যদের এলাকায় যাওয়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো সুফল আসছেনা। তাই সভানেত্রীর কার্যালয় থেকে বিষয়টি মনিটরিং করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সাংগঠনিক দুর্বলতা আর অতিমাত্রায় প্রশাসননির্ভরতার কারণেই সরকার থেকে কঠোর পদক্ষেপ নিলেও সহিংসতা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাঙ্খিত সুফল মিলছে না বলেই মনে করছেন দলের সিনিয়র নেতারা।
দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন, শুধু সমন্বয়হীনতার কারণেই সারাদেশে বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির নামে ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা দেশের জনগণকে একত্রিত করতে পারছেনা সরকার। অবরোধের নামে যে সহিংসা হচ্ছে সেটি বাংলাদেশের কোনো মানুষই চায়না। কিন্তু কোথায় তারা প্রতিবাদ জানাবে। সেই নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হচ্ছি আমরা।
একজন সিনিয়র নেতা বলেন, সংসদীয় দলের সভায় সকল এমপিকে স্ব-স্ব এলাকায় গিয়ে জনগণকে সংগঠিত করার নির্দেশ দেয়া হলেও তা পালন করা হয়নি। সাত দিনের জন্য সংসদ অধিবেশন মুলতবি করা হলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের অধিকাংশ এমপি-মন্ত্রীই অবস্থান করছেন ঢাকায়, এলাকায় যাননি।
এ নিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ক্ষোভের কমতি নেই। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরপরই এমপি-মন্ত্রী ও জেলার নেতারা যদি মাঠে নামতেন, এলাকার গণমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী কমিটি গঠন করে প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবে নাশকতা-সহিংসতা দমন করা যেত, তবে সন্ত্রাসীরা দেশের কোথাও এভাবে চোরাগোপ্তা হামলা করে মানুষের প্রাণহানি ঘটাতে পারত না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও চৌদ্দ দলের সমন্বয়ক মোহাম্মদ নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন সকল এমপির নিজ নিজ এলাকায় গিয়ে সহিংস পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনগণকে সঙ্গে কাজ করতে। আমার জানা মতে, অধিকাংশ সংসদ সদস্যই এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করেছেন। তবে যাঁরা যাননি পক্ষান্তরে তাঁরা দলকেই ক্ষতিগ্রস্ত করছেন।