মাসুদ রানা
হেই, বঙ্গজ প্রোফেসার এমেরিট্যাস! কথা শোনো আমার! জবাব দাও এই শূদ্রের এক প্রশ্নের, যদি শিক্ষক হও সত্যিই পেশায়, যদি থাকে ন্যুনতম বিবেক তোমার।
গাজিপুরে যখন ঢাকা রেইঞ্জের পুলিসের ডিআইজি বলে, “গুলি করা শুধু নয়, নাশকতাকারীর বংশধরশুদ্ধ নষ্ট করে দেবেন”, তখন কী আছে তোমার বলার?
সন্ত্রাসী যখন সন্ত্রাসীর মতো সন্ত্রাস করে, তখন তুমি সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে রাস্তায় নামো। আর পুলিস যখন সন্ত্রাসীর মতো সন্ত্রাসীর বংশধরশুদ্ধ নষ্ট করার হুমকি দেয়, তখন কোথায় থাকে তোমার বিবেক? কোথায় থাকে তোমার বুদ্ধি, হে বুদ্ধিজীবী প্রোফেসার এমেরিটাস?
তোমাদের মতো বুদ্ধিজীবীরাই সেদিন নীরব ছিলো, যেদিন শেখ মুজিবুর রহমানের একদলীয় দূঃশাসন বাকশাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। তোমাদের মতো বুদ্ধিজীবীরাই সেদিন নীরব ছিলো, যেদিন বাকশাল সরাতে গিয়ে শেখ মুজিবুর রহামানের বংশের নিরাপরাধ শিশু ও নিরীহ নারীদের হত্যা করা হয়েছিলো। সেদিনও নিশ্চয় এমনিভাবে কোনো সেনা অফিসার বিদ্রোহী সেনাদের “বংশধরশুদ্ধ নষ্ট করে দেবেন” বলে নির্দেশ দিয়েছিলো?
তোমাদের মতো লোক যে-জাতির বুদ্ধিজীবী ও প্রোফেসর এমেরিটাস হয়, সে-জাতি ঔপনিবেশিক হানাদার বাহিনীর হাতে ৩০ লক্ষ প্রাণ হারিয়ে যুদ্ধে জিতে স্বাধীন হওয়ার পর স্বজাতির অলিগার্কদের কাছে স্বাধীনতা হারায়। তোমাদের মতো বুদ্ধজীবীরা থাকে বলেই রিপাবলিকের নাম ‘প্রজাতন্ত্র’ হয় এবং স্বাধীন নাগরিকগণ প্রজায় পরিণত হয়। তোমাদের মতো বুদ্ধিজীবীরা থাকে বলেই এই জাতি গণতন্ত্রের নেতৃত্ব আরোপিত হয় বংশ পরম্পরায়, আর রাজনৈতিক কর্মীসধাকগণ ‘কর্মী’ বা ‘ওয়ার্কার’ হিসেবে সেবাদাস হয়ে বন্দনা গাইতে থাকে।
তোমাদের এই বুদ্ধিজীবীত্বের বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত এই জাতির বিবেক জাগবে না। কারণ, বিবকের পদ তোমাদের মতো বিবেকহীনেরা দখল করে বসে আছো। ধিক! তোমাদের ধিক!
শনিবার ৭ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড