মোসাদ্দেক আলী ফালু। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। এই পরিচয় ছাপিয়ে সবচেয়ে বড় পরিচয়-তিনি খালেদা জিয়ার “আস্থাভাজনদের”একজন।
গত ছয় বছরে বিএনপির অনেক বড় বড় নেতা হামলা-মামলা-জেল-জুলুমের মুখোমুখি হলেও ফালু ছিলেন ব্যতিক্রম। জেল খাটাতো দূরে থাক তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি।
তবে কিসের জোরে তিনি সবকিছুর ঊর্ধ্বে ছিলেন তা নিয়ে রয়েছে অনেক মত, অনেক কথা।
অনেকে মনে করেন, ফালু বর্তমান সরকারের সাথে আপোষ করেই হয়তো এসব কিছু থেকে মুক্ত থেকেছেন। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগের এই শাসনামলে টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন ওনার্স-এ্যাটকোর সভাপতি হয়েছেন। এসব কিছুই তার আপোষ-মীমাংসার ফসল। লম্বা সময় ধরে তিনি খালেদা জিয়ার কাছ থেকে ছিলেন দূরে।
তবে গত ২৭ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ দেশে আসার পর খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে তাকে দেখা যায়। ফালুকে দেখা যায় কান্নায় ভেঙে পরতেও।এ দৃশ্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সরকারের ‘সতর্ক নজরে’ আসে খালেদা জিয়ার এই উপদেষ্টা।
এর পরই গতকাল রবিবার খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে ফেরার পথেই আটক হন ফালু।আটকের পর তাকে নেয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে। সেখানে তাকে জামাই আদরে রাখা হয়েছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। রাতে তাকে বাইরে থেকে খাবার এনে দেয়া হয়েছে। ঘুমানোর জন্য এক কর্মকর্তার বিশালাকার একটি রুম দেয়া হয়েছে। সেখানে রাতটা বেশ আরামেই কাটিয়েছেন ফালু।গ্রেপ্তারের সময়ও হাসতে হাসতে তাকে গাড়িতে গাড়িতে ওঠতে দেখা যায়।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আজ সোমবার সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি ফালুকে। তাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না বা গ্রেপ্তার দেখানো হলেও কোন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে এ নিয়ে তা নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায় দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। তবে সমালোচকরা বলছেন, হয়তো এই পালায়ও বেঁচে যেতে পারেন ফালু।
এই লোকটিকে গত ৬ বছর বিএনপির কোন রকম কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। হঠাত দেখা গেল তিনি আরাফাত রহমান কোকোর কফিনের পাশে বসে কাঁদছেন। এখন দেখা যাচ্ছে উনাকে গ্রেফতার করেছে সরকার। একজন সাধারণ বিএনপির সমর্থক হিসাবে মনে হয় এই গ্রেফতার নাটক তারই নিজস্ব পরিকল্পনার অংশ। এসব করে তিনি এখন বিএনপির হাই কমান্ডের সহানুভূতি পেতে চান।
Falu hayenader dalal