সরকার যতভাবেই চাপ প্রয়োগ করুক না কেন, কার্যালয় থেকে নড়বেন না বেগম খালেদা জিয়া। গ্যাস ও পানির লাইন কেটে দেয়া হলেও তাকে এক চুল নড়ানো যাবে না। তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছ থেকে এমন তথ্যই পাওয়া গেছে।
তারা দাবি করেছেন, সরকার যতই চাপ প্রয়োগ করুক না কেন, বেগম খালেদা জিয়া কার্যালয় ছাড়বেন না। সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেও তাকে কার্যালয় ছাড়তে সরকার বাধ্য করতে পারবে না। এ কথা তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘এভাবে একজন সাধারণ নাগরিকের অধিকারও সরকার কেড়ে নিতে পারে না। সেখানে তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সরকার যা করছে তা মানুষ দেখছে। এর ফল সরকারকে ভোগ করতে হবে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলন দমানো যাবে না। সরকারের পা জালে জড়িয়ে গেছে, জনগণের ফুঁসে উঠতে আর শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
শুক্রবার মধ্যরাতের পর খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় সরকার। এরপর একে একে টেলিফোন, মোবাইল নেটওয়ার্ক, ইন্টারনেট সংযোগ, ক্যাবল সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।
গুঞ্জন উঠেছে কার্যালয়ের পানি ও গ্যাসের লাইনও বিচ্ছিন্ন করা হবে। আর এভাবেই কার্যালয় থেকে খালেদাকে বের করতে চায় সরকার।
বর্তমানে খালেদার কার্যালয়ে জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। বাইরে থেকে বিশুদ্ধ পানি আনা হচ্ছে, অন্যান্য সুবিধাও বিকল্প উপায়ে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কার্যালয়ের সামনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে কতদিন থাকতে পারবেন খালেদা জিয়া? ধারনা করা হচ্ছে, খালেদার ব্যাপারে আরও কঠোর হবে সরকার। সে ইঙ্গিতও মিলেছে দিনভর।
সরকারের মন্ত্রী এমপি ও ক্ষমতাসীনদের নেতারা শুক্রবার দিনভর বিভিন্ন সভায় ঘোষণা দেন, খালেদার কার্যালয়ের সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
শুক্রবার প্রেস ক্লাবে একটি অনুষ্ঠানের আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, শুধু বিদ্যুৎ নয়, খালেদার কার্যালয়ের সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।
অন্যদিকে বাগেরহাটে নৌপরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদার কার্যালয়ে খাবার সরবরাহও বন্ধ করা হবে।
এদিকে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে সব ধরনের সংযোগ একের পর এক বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন রাজনীতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও মানবাধিকার কর্মীরা। তারা এ ঘটনাকে ন্যক্কারজনক ও রাজনৈতিক কলঙ্ক বলে মন্তব্য করেন।
খালেদার দুইতলা কার্যালয়ে কক্ষ আছে মোট ৫টি। গত ৩ জানুয়ারি থেকেই তিনি এ কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। নিচতলায় কক্ষ আছে দুটি, আছে একটি রান্না ঘর। আর দোতলায় কক্ষ আছে তিনটি।