অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সাবেক মহাসচিব আইরিন খান বলেছেন, “জনতা অধৈর্য্য হয়ে পড়ছে, সেটা পরিষ্কার। আমরা ডানেও যাচ্ছি না, বাঁয়েও যাচ্ছি না। তাই কালো গর্তের মধ্যে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটা কিন্তু সাংঘাতিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়াবে।” বাংলাদেশে এখন একদলীয় শাসন চলছে বলেই মনে করেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে এ কথা বলেন তিনি। এতে প্যানেল আলোচক হিসেবে আরো ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, বি্এনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিমা ফিরদৌস।
সংলাপের এ বিশেষ পর্বে দেশে প্রতিনিধিত্বশীল শাসন ব্যবস্থা আছে কি-না, সর্বদলীয় নির্বাচনের জন্য ফর্মুলা, অন্তর্বর্তী নির্বাচনের সম্ভাবনা এবং উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্র জরুরি কি-না এমন বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির বিতর্কিত নির্বাচনের বার্ষিকী পালিত হতে হচ্ছে মঙ্গলবার।
এ নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক অঙ্গন। কেউ দিনটিকে পালন করছে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস আর কেউ পালন করছে গণতন্ত্র হত্যা দিবস হিসেবে।
এমন পটভূমিতে আজ বাংলাদেশ সংলাপের বিশেষ পর্বটি অনুষ্ঠিত হলো।
এ পর্বে একজন দর্শক জানতে চান গণতন্ত্র যদি হয় একটি দেশের সব নাগরিকের প্রতিনিধিত্বশীল শাসন ব্যবস্থা, তাহলে ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বাংলাদেশে কি সেই ব্যবস্থা আছে ?
আরেকজন দর্শক জানতে চান নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কালীন সরকারের একটি ফর্মুলা কি খুঁজে পাওয়া যাবে।
আইরিন খান জানান ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে তিনি নিজেও ভোট দিতে পারেননি কারণ তার এলাকাতেও একজন মাত্র প্রার্থী ছিলেন।
তিনি বলেন, “ একদলীয় শাসন আছে বলেই বলবো। কিন্তু এর মাশুল বিএনপিও দেবে না, আওয়ামী লীগও দেবে না। দেবে সাধারণ মানুষ। কারণ সুশাসন হবে না। আওয়ামী লীগ যতই ভালো কাজ করতে চায় না কেন একা পারবে না। তাই দুদল মিলে সমঝোতা করতে হবে।”
তবে একই সঙ্গে তিনি বলেন কেউ কেউ বলছেন বর্তমান সরকার প্রতিনিধিত্বশীল সরকার নয়, আবার যারা ভোট দিয়েছেন তারা বলছেন প্রতিনিধিত্বশীল। এ কারণেই সমঝোতা জরুরি বলে মনে করেন আইরিন খান, যিনি এখন রোম ভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ল অর্গানাইজেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রায়ই একই ধরনের অভিমত দেন সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌস। তবে তিনি বলেন এর আগের সংসদে বিরোধী দল ছিল কিন্তু তাদের কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। তাই গণতন্ত্র ও নির্বাচনের জন্য সব দলকেই দায়িত্ব পালন করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, “একটা দলের একনায়কতন্ত্রই হচ্ছে। কিন্তু সেখানে দলের নেতৃত্বকে রেসপন্সিবল করতে হবে। কোনো দলের মধ্যে কোনো গণতন্ত্র আমরা দেখেছি বলে মনে হয় না।”