গত সাত দিন ধরে চোখে কোনো পানি ঝরছে না। ওই ঘটনার পর থেকে কান্নার লেশমাত্র নেই আমার চোখে। বলতে পারেন পাথর হয়ে গেছি। নিজ সিদ্ধান্তে অটল থাকব। প্রয়োজনে আরও একটি মামলা করব রুবেলের বিরুদ্ধে। কথাগুলো বলছিলেন হালের আলোচিত ‘আনহ্যাপি’ ঘটনার নায়িকা হ্যাপী।
প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপকালে হ্যাপী বলেন, আমি মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত হয়েছি যে, শোকে পাথর হয়ে গেছি। অনেকেই চাপ দিচ্ছেন যাতে মামলা তুলে ফেলি। কিন্তু ঘাবড়াবো না। সত্যের জন্য লড়াই করে যাব। এ ভুলের জন্য এত বড় মাশুল দিতে হবে তা বুঝতে পারিনি। সমাজের অনেক মেয়ে এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি হয়। কিন্তু হাই প্রোফাইল ছেলেদের জন্য মুখ বুঝে মেয়েরা সহ্য করে থাকে। তারা যেন আমার মতো ভুল না করে এটাই প্রত্যাশা।
গত ১৩ তারিখের মামলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে হ্যাপী বলেন, দশ কার্যদিবস সম্পন্ন হলে ফরেনসিক রিপোর্ট হাতে পাব। এর পর থানা থেকে আদালতে গড়াবে মামলাটি। এর মধ্যে আমার কিছুই করার নেই। তবে চিন্তা করেছি রুবেলের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করব।
নতুন মামলা প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, প্রতারণা করে আমার সঙ্গে অনেক কিছুই করেছে। ইতিমধ্যে যে মামলাটি করেছি সেটি নারী নির্যাতন আইনে। এবার হয়তো করব প্রতারণার দায়ে। জানি না, আমার ভাগ্যে কি আছে তবে, এর শেষ দেখতে চাই। এছাড়া কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করব রুবেলের ডিএনএ টেস্ট করা হয়। ডিএনএ টেস্ট সম্পন্ন হলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে উঠবে।
‘পাবলিসিটির জন্য হ্যাপী এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছেন’— এমন প্রচারণার বিষয়ে হ্যাপী বলেন, দেখুন মিডিয়া থেকে অনেকটা দূরে সরে গিয়েছিলাম। ইচ্ছা করেই এ জগত্ থেকে পিছুটান দিয়েছি। মূলত ‘রিয়েল ম্যান’ ছবিতে অভিনয়ের পর পরই এ জগেক টা টা জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাহলে নতুন করে পাবলিসিটিতে নামব কেন?
কয়েক দিন ধরেই ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’ হয়ে চায়ের টেবিলে ধোঁয়া তুলছে হ্যাপী-রুবেল প্রেমকাব্য। মাকে শুটিংয়ে যাওয়ার কথা বলে রুবেলের বাসায় এসে হ্যাপীর রাতের পর রাত কাটানো, এরপর রুবেলের বিরুদ্ধে মামলা এবং দুজনের প্রেম রসায়ন মানুষের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এদিকে হ্যাপী-রুবেলের পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্যের ঝড় শুরু হয়েছে সামাজিক সাইটগুলোতেও। কেউ হ্যাপীর পক্ষ নিয়ে বলছেন, রুবেল ক্রিকেট তারকার খ্যাতিকে সামনে রেখে হ্যাপীকে ভোগসামগ্রী বানিয়েছেন। অন্যপক্ষ রুবেলের পক্ষ নিয়ে বলছেন, হ্যাপী রুবেলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন। আর হ্যাপীর বক্তব্য সত্য হলে তাকে তো নির্দোষ বলার সুযোগ নেই। তিনি কেন মায়ের কাছে মিথ্যা বলে রাতের পর রাত অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত থাকলেন।
অন্যদিকে দুজনের গোপন ফোনালাপ প্রকাশ হওয়ার তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে গোটা মিডিয়া পাড়ায়। নিত্যনতুন মন্তব্যে বিদ্ধ হচ্ছে রুবেল ও হ্যাপী। নানা সূত্রে জানা গেছে, নয় মাসের ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল হ্যাপী-রুবেলের মধ্যে। নভেম্বর মাসজুড়ে ফোনে বিয়ের চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন হ্যাপী। আর রুবেল এড়িয়ে গেছেন নানাভাবে।
উল্লেখ্য, গত ১৩ ডিসেম্বর বিকালে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপী জাতীয় ক্রিকেট দলের পেসার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন। এরপর হ্যাপীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে নিয়ে তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়। ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে মিরপুর থানায় নিয়ে তাকে মামলা-সংক্রান্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাসায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে রুবেল হোসেন হাইকোর্টে জামিন নিতে যান এবং চার সপ্তাহের আগাম জামিন পান।