ব্রেকিং নিউজ
Home / প্রচ্ছদ / ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’র দ্বিতীয় সংস্করণে পরিবর্তন আনলেন এ কে খন্দকার

‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’র দ্বিতীয় সংস্করণে পরিবর্তন আনলেন এ কে খন্দকার

a k khandaker1সেপ্টেম্বর ০৯, ২০১৪ : মুক্তিযুদ্ধের উপঅধিনায়ক ও সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এ কে খন্দকার রচিত ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’ গ্রন্থ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। এরই সূত্র ধরে তিনি তার বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণে কিছুটা পরিবর্তন এনেছেন।

বইটির দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকায় তিনি উল্লেখ করেছেন ‘বইয়ের ৩২ নম্বর পৃষ্ঠায় দ্বিতীয় স্তবকে আমি লিখেছিলাম “এই ভাষণের শেষ শব্দ ছিল জয় পাকিস্তান।” আসলে তা হবে, “এই ভাষণের শেষ শব্দগুলো ছিল জয় বাংলা জয় পাকিস্তান।”

এ কে খন্দকার ওই ভূমিকায় আরও লিখেছেন, ‌‘দ্বিতীয় সংস্করণের সুযোগে এই সংশোধন করা সম্ভব হলো। সহৃদয় পাঠক এই বইয়ে অন্য কোনো ধরনের ক্রুটি আমার নজরে আনলে বাধিত হব।’

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ বাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ এ কে খন্দকারের (বীর উত্তম) ১৯৭১: ভেতরে বাইরে বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠান হয়। বইটি প্রকাশিত হয় প্রথমা প্রকাশন থেকে।

প্রকাশনার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর বইটির বিষয়ে তুমুল সমালোচনা করা হয় জাতীয় সংসদে এবং বইটি বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান হয়।

 বইতে এ কে খন্দকার লিখেছেন, ‘ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হওয়ার ঠিক আগে শেখ সাহেব ইপিআরের বেতারযন্ত্রের মাধ্যমে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরীর কাছে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠিয়েছিলেন। এই তথ্যটি মোটেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।’ (পৃ. ৫৭)

একে খন্দকার এ বিষয়ে প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদেরও উদ্ধৃতি দিয়েছেন : ‘একদিন আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ‘স্যার, বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হওয়ার আগে আপনি কি তাঁর কাছ থেকে কোন নির্দেশনা পেয়েছিলেন?’ উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘না, আমি কোন নির্দেশ পাইনি’ (পৃ. ৪৩)।

৭ মার্চের ভাষণ নিয়ে এ কে খন্দকার লিখেছিলেন, বঙ্গবন্ধু ‘জয় পাকিস্তান’ বলেছেন।

জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক নন!

বইটির ৬০ পৃষ্ঠায় এ কে খন্দকার লিখেছেন, মেজর জিয়ার ঘোষণাটিকে কোনোভাবেই স্বাধীনতার ঘোষণা বলা চলে না। মেজর জিয়া রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না বা ঘোষণা দেওয়ার মতো উপযুক্ত ব্যক্তিও ছিলেন না। যে ঘোষণা চট্টগ্রাম বেতার থেকে তিনি দিয়েছিলেন ঠিক একই ধরনের একাধিক ঘোষণা ২৬ ও ২৭ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার থেকে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক ও ছাত্রনেতাও দিয়েছিলেন, এমন কি বেতারকর্মীরাও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। 

বইটির ৫৩ পৃষ্ঠায় তিনি লিখেছেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ব্যক্তি স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে নানা কথা বলেন। সেগুলো সত্য কী অসত্য, তা জানার উপায় নেই। এগুলোর পক্ষে বা বিপক্ষে কেউ কোন দলিল উপস্থাপন করেননি। আমার মনে হয়েছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা আবেগপ্রসূত।’ 

সেসময় নিজের লেখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে একে খন্দকার বীর উত্তম বলেছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি যা দেখেছি তা-ই লিখেছি। সত্য প্রকাশে অনড় হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় গৃহীত পরিকল্পনার সঙ্গে সব কিছু খাপ খায়নি।

প্রকাশনার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর বইটির বিষয়ে তুমুল সমালোচনা করা হয় জাতীয় সংসদে এবং বইটি বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান হয়। সেইসাথে এ কে খন্দকারকে সেক্টর কমান্ডারস ফোরম থেকে অব্যহতি দেওয়ারও আলোচনা সামনে চলে আসে। গতকাল সোমবার ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ করে শাহবাগে ‘১৯৭১: ভেতরে বাইরে’র কপি পোড়ায় গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা।

এদিকে সরকারের ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সাথে দ্বিমত পোষণ করে বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বইটির পক্ষেই কথা বলেছেন।