সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪: শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘শান্তি বৃক্ষ স্মারক’ সম্মাননা দিয়েছে ইউনেস্কো।
রাজধানীর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বকোভা প্রধানমন্ত্রীর হাতে সম্মাননা তুলে দেন।
এর আগে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার সকালে ‘টেকসই উন্নয়নের ভিত্তি : নারী শিক্ষা ও সাক্ষরতা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইউনেস্কো পুরস্কার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী শিক্ষার প্রসার এবং নারী শিক্ষা প্রসারে অসামান্য অবদানের জন্য এবার দুটি ক্যাটাগরিতে ৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন: বুর্কিনা ফাসো’র অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য প্রমোশন অব নন-ফরমাল এডুকেশন এর প্রেসিডেন্ট আনাতোলে টি. নিয়ামেওগো (Anatole T. Niameogo), ইকুয়েডরের শিক্ষামন্ত্রী আগুস্তো এসপিনোসা,(Augusto Espinosa), আলজেরিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যালফাবেটাইজেশন’র প্রেসিডেন্ট আয়েশা বার্কি (Aicha Barki), স্পেনের পারমানেন্ট এডুকেশন সেন্টার পলিগনো সার সেবিলি’র পরিচালক আনা গার্থিয়া রেইনা (Ana Garcia Rein), এ প্রতিষ্ঠানের উপ-পরিচালক ইসাবেল দিয়েলবার্ত (Isabel Dealbert), দক্ষিণ আফ্রিকার মল্টটেনো ইনস্টিটিউট ফর ল্যাগুয়েজ অ্যান্ড লিটারেসি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লিটারেসি ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাসেন্নিয়া দিকোতলা (Masennya Dikotla), এ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ড্যান এ. ওয়াগনার (Dan A. Wagner)।প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে সনদ, স্মারক ও পুরস্কারের অর্থ তুলে দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা।
ইউনেস্কো সাক্ষরতা পুরস্কারে অংশ নেওয়ার জন্য এবার ঢাকায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ২৭ দেশের প্রতিনিধি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) ৬০ জন বিদেশী শিক্ষানুরাগী এসেছেন। যাদের মধ্যে ইকুয়েডর, শ্রীলংকা, ভুটানের শিক্ষামন্ত্রী, আফগানিস্তানের উপ-শিক্ষামন্ত্রী উল্লেখযোগ্য।
পুরষ্কারপ্রাপ্তীর পর ইউনেস্কোর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শান্তিবৃক্ষ স্মারকটি সমগ্র বিশ্বের নারীদের উৎসর্গ করে বলেন, এই স্বীকৃতি আমি বাংলাদেশের মা-বোনদের, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের উৎসর্গ করছি। এর দাবিদার তারাই।
সাক্ষরতা ও শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ইউনেস্কো লিটারেসি অ্যাওয়ার্ড ২০১৪’ পাওয়া যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, দক্ষিণ আফ্রিকা, আলজেরিয়া, ইকুয়েডর ও বুর্কিনা ফাসোর বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদেরও অভিনন্দন জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসি তখন সাক্ষরতার হার ছিল ৪৫ শতাংশ। সেটাকে ২০০১ সালে আমরা ৬৫ ভাগে নিয়ে যাই। কিন্তু পরবর্তীতে বিএনপি-জামায়াত সরকার সেই অর্জন ধরে রাখতে ব্যর্থ হয। ২০০৬ সালে সাক্ষরতার হার ৪৪ শতাংশে নেমে আসে।
তিনি বলেন, রূপকল্প ২০৪১-এর ভিত্তিতে একটি উন্নত, সুশিক্ষিত ও বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনের সোপান রচনায় আমরা দৃঢ়প্রতজ্ঞ। এই কর্মযজ্ঞে নারী ও মেয়ে শিশুরা সব সময়ই আমাদের বিবেচনার অগ্রভাগে থাকবে।