ব্রেকিং নিউজ
Home / ধর্ম / ইসলামে স্বামীর অধিকার

ইসলামে স্বামীর অধিকার

 

মুফতি শামছুল হক সা’দী আল-হাবীবী

স্বামীর হক আদায় না করে, তাঁর অনুগত না থেকে কথায় কাজে তাঁকে অপমান করা কোনো ভদ্র মহিলার কাজ নয়। মহান আল্লাহতায়ালা সূরাতুন নিসার ৩৪নং আয়াতে বলেন, ‘পুরুষগণ স্ত্রীগণের ওপর কর্তৃত্বশীল/সংরক্ষক; কারণ মহান আল্লাহ তাদের এককে অপরের ওপর প্রাধান্য দিয়েছেন এবং পুরুষগণ তাদের ধনসম্পদ ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত। লোকচক্ষুর অন্তরালে তারা সংরক্ষণ করে ওই সব বিষয় যা মহান আল্লাহ সংরক্ষণ করেছেন।’

পুণ্যবতী নারীর অন্যতম পরিচয় স্বামীর আনুগত্য। নারীকে তার নিজ স্বার্থে স্বামীর আনুগত্য করতে হবে। নচেৎ পারস্পরিক সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। মুসনাদে আহমাদ বর্ণিত হাদিসে আছে, যে মহিলা যথারীতি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে, রমজান মাসের রোজা রাখে, নিজের সতীত্ব রক্ষা করে চলে এবং স্বামীর পূর্ণ আনুগত্য করে, তার ইচ্ছা, সে জান্নাতের (আটটি দরজার) যে কোনো দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।

শু’আবুল ইমান লিল বাইহাকি বর্ণিত হাদিসে আছে, তিন প্রকারের লোকের নামাজও কবুল হবে না এবং কোনো নেকিও উপরে উঠবে না।

১. পালিয়ে যাওয়া গোলাম; যে পর্যন্ত মনিবের হাতে ফিরে না আসে।

২. ওই মহিলা যার ওপর স্বীয় স্বামী নারাজ হয়ে যায়।

৩. ওই শরাব পানকারী মাতাল; যে পর্যন্ত তার শরাবের ক্রিয়া শেষ না হয়।

হাদিসে আছে, মহান আল্ল­াহ ওই মহিলার দিকে তাকান না, যে মহিলা তার স্বামীর অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, অথচ সে তার দিকে মুখাপেক্ষী। ওই মহিলা সবচেয়ে অভিশপ্ত, যে মহিলা (স্বামীর) বিনা অনুমতিতে ঘর থেকে বের হয়, এমতাবস্থায় সে নিজের স্বামীর বদনাম করে। উল্লে­খ্য, নিচ ও রুচিহীন মহিলার অভ্যাস হলো স্বামীর বদনাম করা, গিবত করা। ইমাম ইবনে মালেক (রহ.) এর মতানুযায়ী স্বামী-স্ত্রীর আপসের প্রত্যেকের কথাবার্তা, কার্যকলাপ অপরের কাছে আমানত। তাদের যে কেউ তা প্রকাশ করবে, যা সে অপছন্দ করে, তাহলে নিশ্চিতই সে খেয়ানত করল। আর তা যদি হয় অপবাদ তাহলে তো তা মারাত্মক ঘৃণিত কবিরা গুনাহ। তিরমিজি শরিফ ও ইবনে মাজাহ শরিফে বর্ণিত হাদিসে আছে, দুনিয়াতে যখন কোনো স্ত্রী তার স্বামীকে বিরক্ত করে এবং কষ্ট দেয়, তখন জান্নাতের যে সব হুর আখেরাতে ওই পুরুষের সঙ্গিনী ও সহধর্মিণী হবে তারা ওই মহিলাকে লক্ষ্য করে বলতে থাকে, মহান আল্লাহ তোমার সর্বনাশ করুন, তুমি আর তাঁকে কষ্ট দিও না, তিনি মাত্র কয়েক দিন তোমার কাছে মেহমান স্বরূপ আছেন, কিছু দিনের মধ্যেই তিনি তোমাকে ছেড়ে আমার কাছে চলে আসবেন।

ইবনে মাজাহ্ শরিফে বর্ণিত অপর এক হাদিসে আছে, জনৈক সাহাবি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রসুলুল্লা­হ। সর্বাপেক্ষা উত্তম স্ত্রী কে? প্রিয় নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাবে বললেন, যে স্ত্রীকে দেখলে নয়ন জুড়ায়, যে স্ত্রী স্বামীর সম্পূর্ণ অনুগত ও তাঁর মতের বাইরে কোনো কাজ করে না।

লেখক : মুহতামিম, মুহাম্মাদিয়া কওমি মহিলা মাদ্রাসা, ৮৬, মুসলমানপাড়া রোড, খুলনা।