ব্রেকিং নিউজ
Home / বিশ্ব / আজ বিশ্ব বন্ধু দিবস, কেন পালিত হয় বন্ধু দিবস? জানুন ইতিহাস

আজ বিশ্ব বন্ধু দিবস, কেন পালিত হয় বন্ধু দিবস? জানুন ইতিহাস

 

সবার জীবনেই বন্ধুর গুরুত্ব অনেক। একমাত্র বন্ধুর সঙ্গেই মন খুলে সব কথা বলা যায়। বিপদের মুহূর্তেও বন্ধু যেমন এগিয়ে আসে এবং পাশে থাকে; ঠিক তেমনই জীবনে চলার পথে বন্ধু সবসময় সাহস জোগায়। বন্ধুর সঙ্গে বন্ধুর আত্মার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বন্ধু ছাড়া জীবন কাটানো খুবই কষ্টকর।

আজ বন্ধু দিবস। প্রতিবছর আগস্টের প্রথম রবিবার পালিত হয় আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবস পালিত হয়। এদিন বন্ধুরা একে অপরকে উপহার দেয়। বিভিন্নভাবে উইশ করে থাকেন। হাতে ফ্রেন্ডশিপ ব্রেসলেট পরিয়ে দেন। এ ছাড়াও সবাই মিলে আড্ডা দিয়েও উদযাপন করা হয় দিনটি।

তবে ঠিক কবে থেকে বন্ধু দিবস পালন করা হচ্ছে এবং কেমনই বা দিবসটি পালিত হচ্ছে, তা কি জানেন? যদিও বন্ধু দিবসের সঠিক ইতিহাস নিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে বেশ কিছু ইতিহাসের তথ্য অনুযায়ী, ধারণা করা যায় ১৯৩০-৪০ সালের মধ্যবর্তী কোনো এক সময়েই বন্ধু দিবস পালন করা শুরু হয়।

১৯৩০ সালে হলমার্ক কার্ডের প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল বন্ধুত্ব দিবসের আয়োজন করেন। ২ আগস্ট এই দিনটি পালনের আয়োজন করেন তিনি; যাতে সবাই একসঙ্গে মিলে বন্ধুত্বের উৎসব পালন করতে পারেন। তবে সবাই তখন বুঝতে পারেন যে, এটি গ্রিটিংস কার্ড বিক্রির কৌশল।

ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেডের পক্ষ থেকেই প্রথম ১৯৫৮ সালের ৩০ জুলাই আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবসের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। বন্ধুত্বের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ সংস্কৃতির স্থাপনের জন্য প্রচার চালায় এই সংস্থা।

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও এরপর ছড়িয়ে যায় দিবসটি। বন্ধু দিবসে বন্ধুদের ফুল, কার্ড, রিস্ট ব্যান্ড ইত্যাদি উপহার দিয়ে বন্ধুদের প্রতি ভালোবাসা জ্ঞাপন করা হয়। একেক দেশে একেক তারিখে বন্ধু দিবস পালিত হয়।

প্রথম দিকে বিভিন্ন কার্ড তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডশিপ ডে’র চল শুরু করে। পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে এই দিন উদযাপন বিশাল আকার ধারণ করে।

১৯৫৮ সালের ২০ জুলাই বিশ্বব্যাপী বন্ধুত্ব দিবস পালনের চিন্তা ডা. র‍্যামন আর্টেমিও ব্রাকোর মাথায় আসে। প্যারাগুয়ে শহরের পুয়ের্তো পিনাস্কোয়ে নিজের বন্ধুদের সঙ্গে নৈশভোজে বসেছিলেন তিনি। তখনই বন্ধুদের সঙ্গে মিলে গড়ে তোলেন মেরি গ্রুপ ওয়ার্ল্ড ফ্রেন্ডশিপ ক্রুসেড।

এই সংস্থাটি জাতি, বর্ণ, ধর্ম, ভাষা, লিঙ্গ নির্বিশেষে নিঃস্বার্থ ও মানবদরদী বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করে। এরপর ১৯৯৮ সালে রাষ্ট্রসংঘ তৎকালীন সাধারণ সচিব কোভি আন্নানের স্ত্রী ন্যান আন্নান উইনি দ্য পু কার্টুন চরিত্রকে বন্ধুত্বের দূত হিসেবে চিহ্নিত করেন।

আরেক তথ্যানুসারে, ১৯১৯ সালে হলমার্ক কার্ডের প্রতিষ্ঠাতা জয়েস হল ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এমনটিই জানা যায়। তখন অগাস্টের প্রথম রবিবার সবাই বন্ধুদের কার্ড এবং উপহার পাঠিয়ে এই দিবস উদযাপন করতো। আর সেখান থেকেই ধারণা করা হচ্ছে যে অগাস্টের প্রথম রবিবার বন্ধু দিবস পালনের প্রথা এসেছে।

১৯৫৮ সালের ৩০ জুলাই প্রথম ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপিত হওয়র পর ‘জেনারেল অ্যাসেম্বলি অফ দ্য ইউনাইটেড নেশন’ ২০১১ সালের ৩০ জুলাই দিনটি আন্তর্জাতিক বন্ধু দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।ণ জানায় রাষ্ট্রসংঘ।

বন্ধু দিবসের তাৎপর্য হলো- ব্যক্তি, রাষ্ট্র, সংস্কৃতির মধ্যে বন্ধুত্ব শান্তিকে সুনিশ্চিত করবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন জাতির মধ্যে সেতুবন্ধন ঘটাবে। এই উদ্দেশে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব দিবসের সূচনা করা হয়।

এ দিনে বন্ধুরা একে অপরকে ফ্রেন্ডশিপ ব্যান্ড, কার্ড, উপহার দিয়ে পালন করে থাকেন। বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে, পরস্পরের সঙ্গে সময় কাটান। এ বছরের ফ্রেন্ডশিপ ডে-তে নিজের বন্ধুত্বের হাত প্রসারিত করুন। সব বিভেদ ও হিংসা ভুলে সবাইকে আপন করে নিন।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস