দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের উপকূলবর্তী কাউন্টি কেন্টের ডোভার বন্দরে এর মধ্যেই রেকর্ড সংখ্যক শরণার্থী এসে পৌঁছেছেন। বছরটা শেষ হতে আরও পাঁচ মাস বাকি। ফলে বছরের শেষে অবৈধ শরণার্থীদের সংখ্যাটা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবে এখন থেকেই আতঙ্কিত স্থানীয় প্রশাসন।
বছরের এই সময়টায় ইংলিশ চ্যানেলে পানি থাকে সবচেয়ে উষ্ণ। তাই নিজেদের জীবন বিপন্ন করে ছোট ছোট ডিঙি নৌকায় সমুদ্র পাড়ি দিয়ে শরণার্থীদের যুক্তরাজ্যে প্রবেশের প্রবণতাও সবচেয়ে বেশি বাড়ে ঠিক এই সময়েই।
ব্রিটেনের প্রশাসন জানিয়েছে, শুধু গত সোমবারই ১৪টি নৌকায় করে কেন্টে পৌঁছেছেন কমপক্ষে ৪৩০ জন। ছোট ছোট নৌকায় ঠেসেঠুসে প্রচুর মানুষকে ঢুকিয়ে দেয় পাচারকারীরা। সঙ্গে লাইফ জ্যাকেট থাকলেও মাঝ সমুদ্রে নৌকা উল্টে গেলে বেঁচে ফেরার পথ প্রায় থাকে না বললেই চলে। গত সপ্তাহের হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরে শুধুমাত্র কেন্টে ১৬ হাজার শরণার্থী ঢুকেছেন। তবে খুব সম্প্রতি নৌকা উল্টোনোর ঘটনা ঘটেনি।
শুধু তরুণরাই নন। শরণার্থীদের এই দলগুলোতে নারী ও শিশুদের সংখ্যাও চোখে পড়ার মতো। কেন্ট প্রশাসন জানাচ্ছে, গত মাসে অন্তত ৪০০টি শিশু যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছে যাদের সঙ্গে কোনো অভিভাবক ছিলেন না। দেশটির সরকারেরই একটি সূত্র বলছে, এশিয়া বা আফ্রিকায় পরিস্থিতি এখন এতটাই ভয়াবহ যে, অনেক ক্ষেত্রে এসব শিশুর বাবা-মায়েরাই মরিয়া হয়ে তাঁদের সন্তানদের একা একা ইউরোপ পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
শুধুমাত্র যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইরাক- সিরিয়া বা দারিদ্র্যে ধুঁকতে থাকা আফ্রিকার লিবিয়া-সুদানই নয়। শরণার্থীদের দল আসছে আফগানিস্তান বা ভিয়েতনামের মতো দেশগুলি থেকেও। ব্রিটেনের উপকূলরক্ষীদের হাতে ধরা পড়লে প্রায় দেড় বছর এই পরিবারগুলিকেই অস্বাস্থ্যকর, ঘুপচি ডিটেনশন সেন্টারে কাটাতে হয়।
সরকারিভাবে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করতে অনেকটাই সময় লেগে যায়। শিশুদের নিয়ে যাওয়া হয় ফস্টার সেন্টারে। তবে সেই পথ এড়াতে গিয়ে অনেকে ক্ষেত্রেই পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েন শরণার্থীরা। পুরুষদের ক্ষেত্রে তা-ও কম বেতনের চাকরি আর ছোট্ট ঘুপচি ঘরে থাকার জায়গা মেলে। নারীদের অনেক ক্ষেত্রেই জায়গা হয় যৌনপল্লীতে।
সূত্র : বিবিসি