ব্রেকিং নিউজ
Home / বিনোদন / দিলীপ কুমারের একাধিক প্রেম ও বিয়ে নিয়ে অজানা কাহিনী

দিলীপ কুমারের একাধিক প্রেম ও বিয়ে নিয়ে অজানা কাহিনী

 

না ফেরার দেশে চলে গেছেন কিংবদন্তি বলিউড অভিনেতা দিলীপ কুমার। পর্দায় ট্র্যাজেডির নায়ক হলেও দিলীপ কুমারের ব্যক্তিগত জীবন ছিল বরাবরই রঙিন। ব্যবসায়ী হতে চেয়ে ঘটনাচক্রে হয়ে যান নায়ক। অভিনয় জীবনে বহু উত্থানপতন দেখেছেন। নায়িকাদের প্রেমে পড়েছেন একাধিকবার।

১৯৪৪ সালে দিলীপ কুমারের প্রথম ছবি ‘জোয়ার ভাটা’ মুক্তি পায়। অভিনয়ের জন্য ইউসুফ খান নাম পাল্টে দিলীপ কুমার রাখেন। এর পর বাকিটা ইতিহাস।

১৯৪৮ সালে মুক্তি পায় ‘শহিদ’। ছবিতে দিলীপ কুমারের নায়িকা ছিলেন কামিনী কৌশল। এই ছবিতে অভিনয় করার সময় তাদের প্রেম হয়।

দুজনে বিয়ে করবেন বলেও ঠিক করেছিলেন। কিন্তু বাধা দিলেন কামিনীর ভাই। তিনি রাজি ছিলেন না এই সম্পর্কে। শোনা যায় তিনি দিলীপ কুমারকে হুমকিও দিয়েছিলেন।

এর পর তাদের সম্পর্ক ভেঙে যায়। সে বছরই কামিনী বিয়ে করেন তার প্রয়াত বোনের স্বামীকে। দুর্ঘটনায় নিহত বোনের দুই মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেন কামিনী।

এর পর দিলীপ কুমার প্রেমে পড়েন মধুবালার। দীর্ঘ সাত বছর চলেছিল তাদের প্রেমপর্ব। এই সম্পর্ক ভেঙে যায় দুই তারকার ইগো-সমস্যায়। একটি ছবির শুটিং লোকেশনে মধুবালাকে যেতে দিতে রাজি ছিলেন না তার বাবা।

পরিচালক-প্রযোজক অনুরোধ করেন দিলীপ কুমারকে। তিনি যেন কথা বলেন মধুবালার বাবার সঙ্গে। দিলীপ কুমারের অভিযোগ ছিল— মধুবালার বাবা তাকে অপমান করেছেন।

অন্যদিকে মধুবালার বক্তব্য ছিল— দিলীপ কুমারের কাছে অপমানিত হয়েছেন তার বাবা আতাউল্লাহ খান। তিনি তার বাবার বিরুদ্ধাচারণ করতে পারেননি।

মধুবালার কথায়, আতাউল্লাহর কাছে ক্ষমা চাননি দিলীপ কুমার। এ ঘটনা কেন্দ্র করে ভেঙে যায় দিলীপ কুমার-মধুবালা প্রেম।

১৯৬০ সালে মধুবালা বিয়ে করেন কিশোর কুমারকে। কিন্তু দিলীপকুমার বেশ কয়েক বছর কোনো সম্পর্ক থেকে দূরে ছিলেন। ১৯৬৬ সালে তিনি বিয়ে করেন সায়রা বানুকে।

শোনা যায়, তার বিয়ের খবরে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন অসুস্থ মধুবালা। তার তিন বছর পরে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে মারা যান তিনি।

সায়রা বানুকে বিয়ের সময় দিলীপ কুমারের বয়স ছিল ৪৪ বছর। সায়রা বানুর বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর। পরে সায়রা বানু একাধিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি ১২ বছর বয়স থেকেই দিলীপ কুমারের অন্ধভক্ত ছিলেন।

অথচ তার স্বপ্নের নায়কই তাকে প্রথম দিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন না। প্রথম আলাপে সায়রা বানুর রূপের প্রশংসা করেছিলেন দিলীপ কুমার। কিন্তু ‘বাচ্চা মেয়ে’ বলে বজায় রাখতেন দূরত্ব।

দিলীপ কুমারের ছবির ভক্ত সায়রা বানু নিজেই একদিন পা রাখলেন ইন্ডাস্ট্রিতে। শোনা যায়, সেই সময় রাজেন্দ্র কুমারের সঙ্গে তার মৃদু ভালো লাগার সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু সায়রার মা, বিগত দিনের অভিনেত্রী নাসিম বানুর হস্তক্ষেপে বিবাহিত রাজেন্দ্রকুমারের কাছ থেকে সরে আসেন সায়রা।

এর পর নাসিম বানুই উদ্যোগী হন দিলীপ কুমারের সঙ্গে মেয়ের বিয়ের। সায়রা বানুর মনে হয়েছিল, দিলীপ কুমারকে স্বামী হিসেবে পেয়ে তার বহুদিনের স্বপ্ন পূর্ণ হলো।

তবে এই বিয়ে বেশি দিন স্থায়ী হবে না বলে সেই সময় অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু দিলীপ কুমার-সায়রা বানু দুজনে দুজনের পাশে ছায়া হয়ে পাঁচ দশকের বেশি দাম্পত্যজীবন কাটিয়ে দিয়েছেন।

তবে আশির দশকের গোড়ায় কিছুটা হলেও ঝড়ের মুখে পড়েছিল তাদের দাম্পত্য। পাকিস্তানের নাগরিক আসমার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন দিলীপ কুমার। এমন গুঞ্জনও শোনা যায়, তিনি সায়রা বানুকে ডিভোর্স দিয়ে বিয়ে করেছিলেন আসমাকে।

কিন্তু দিলীপ কুমাররে দ্বিতীয় বিয়ে নাকি মাত্র দুবছর স্থায়ী হয়েছিল। সেই সম্পর্ক ভেঙে তিনি ফিরে আসেন সায়রা বানুর কাছে। আবার বিয়ে করেন তাকে। এর পর সায়রা বানু অভিনয় পুরোপুরি ছেড়ে দেন। তাদের মতো দীর্ঘ বসন্তের দাম্পত্য বলিউডে বিরল।