সিলেট জেলায় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। গত মাসের মাঝামাঝি থেকে নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা শনাক্ত ১৬ থেকে ১৭ শতাংশে ওঠানামা করলেও সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষায় তা ৩২ শতাংশে উঠেছে। এমন অবস্থায় হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। সরকারি–বেসরকারি মিলিয়ে নগরের সব কটি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) রোগীতে পূর্ণ হয়ে গেছে।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় জেলার ২১৫ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। ৬৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করে এ ফল পাওয়া গেছে। শনাক্ত ৩২ দশমিক ৭২ শতাংশ। করোনা সংক্রমণের পর থেকে এটিই সিলেটে সর্বোচ্চ করোনা শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে গত বুধবার সিলেটে সর্বোচ্চ ১৭৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
সিলেটে করোনা চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালগুলোতে করোনা সংক্রমিত হয়ে কিংবা উপসর্গ নিয়ে যাঁরা চিকিৎসা নিতে আসছেন, তাঁদের অধিকাংশের শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে। এ ছাড়া সর্দি, কাশি ও জ্বর নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন। ভর্তি রোগীদের অধিংকাশের শ্বাসকষ্ট বেশি থাকায় আইসিইউতে স্থানান্তর করতে হচ্ছে। তবে আইসিইউ শয্যার সংকট থাকায় অনেক সময় রোগীর স্বজনদের অন্যত্র স্থানান্তর করতে হচ্ছে।
সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত বিভিন্ন হাসপাতালে শুক্রবার সকাল আটটা পর্যন্ত ৩৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সিলেটে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মহাপাত্র জানান, ১০০ শয্যার হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ডায়ালাইসিসের জন্য নির্ধারিত। তবে রোগীর চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় একটি ডায়ালাইসিসের শয্যায়ও রোগী ভর্তি করে রাখতে হচ্ছে। হাসপাতালে শুক্রবার বেলা একটা পর্যন্ত ৮৮ জন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ৪৮ জন করোনা পজিটিভ। বাকি ৪০ জনেরও করোনার উপসর্গ রয়েছে। তাঁদেরও করোনার স্বাভাবিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য আটটি আইসিইউ শয্যা রয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের উপপরিচালক হিমাংশু লাল রায়। তিনি জানান, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সাতটি আইসিইউ শয্যায় রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। একটি আইসিইউ শয্যা খালি থাকলেও সেটিতে বাইরের রোগী ভর্তি করা হবে না। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য সেটি নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে।
হিমাংশু লাল রায় বলেন, হাসপাতালে বর্তমানে একটি ওয়ার্ডের ৩৭টি শয্যা করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করে রাখা হয়েছে। আইসিইউতে সাতজন এবং ওয়ার্ডে আরও আটজন চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ছাড়া হাসপাতালে করোনার চিকিৎসার জন্য আরও প্রায় ১৫০ শয্যার একটি ইউনিট চালুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে ১০ শয্যার আইসিইউ ইউনিট প্রস্তুত করা হচ্ছে। যাতে বর্তমানে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহের কাজ বাকি রয়েছে।
এ ছাড়া সিলেটে করোনার চিকিৎসার জন্য বেসরকারি দুটি হাসপাতালের মধ্যে সিলেট নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজের ১৮টি আইসিইউ শয্যা ও ৩২টি সাধারণ শয্যায় রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালে করোনার ইউনিটে আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা মিলিয়ে ৫০ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সব শয্যায় রোগী ভর্তি রয়েছে।’
বেসরকারি মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের বিপণন শাখার প্রধান রাশেদুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে ৯টি আইসিইউ ও সাধারণ শয্যা রয়েছে ২৬টি। বর্তমানে সব কটিতেই রোগী চিকিৎসাধীন।
London Bangla A Force for the community…
				
		